ক্রীড়া ডেস্ক: ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের শুরু থেকেই বাজে ব্যাটিংয়ের পসরা সাজিয়ে বসেছে বাংলাদেশ। সেটা থেকে বের হয়ে আসার একটা সুযোগ গত পরশু পেয়েছিল টাইগাররা, কিন্তু হয়নি। সাকিব আল হাসান ছাড়া বলতে গেলে আর কোনো ব্যাটসম্যানই দাঁড়াতে পারেনি জেসন হোল্ডারদের সামনে। শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং অস্বস্তিতেই অ্যান্টিগা টেস্টের মতো জ্যামাইকাতেও তিন দিনেই হারতে হয়েছে সফরকারীদের।
জয়ের জন্য বাংলাদেশের গত পরশু দরকার ছিল ৩৩৫ রান। চলতি সিরিজ আর জ্যামাইকার উইকেটে এ রান করা হয়তো টাইগারদের জন্য ছিল বেশ কঠিনসাধ্য কাজ। তাই বলে একটু লড়াই করা কি যেত না? সেটাও পারেনি সফরকারীরা। তৃতীয় দিনেই মুশফিকুর রহিমরা গুটিয়ে যায় ১৬৮ রানে। তাতে ১৬৬ রানে হার মানে বাংলাদেশ। অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছিল দুই দিন ও এক সেশনে, যে কারণে হোয়াইটওয়াশ হলো টাইগাররা। একই সঙ্গে টেস্ট র্যাংকিংয়ের আট নম্বর থেকে নয়ে নেমে গেছে টাইগাররা। আর ক্যারীবিয়রা স্থান পরিবর্তন করে ফিরে গেছে আট নম্বরে।
বাংলাদেশের হয়ে গত পরশু বল হাতে ৬ উইকেট নেয়ার পর ব্যাট হাতেও বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন সাকিব। করেন ৫৪ রান। দ্বিতীয়
সর্বোচ্চ রান লিটন দাসের ৩৩। মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ৩১ রান, কিন্তু তারা কেউই ২২ গজে নিজেদের ধরে রাখতে পারেনি। চেয়েছেন শুধু শট খেলতে। শেষ পর্যন্ত সেটাই হয়েছে
বিপদের কারণ।
দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৫৯ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন জেসন হোল্ডার। টেস্টে তার সেরা বোলিং। ম্যাচে নিয়েছেন ১০৩ রানে ১১ উইকেট। প্রথমবার স্বাদ পেলেন ম্যাচে ১০ উইকেট নেওয়ার। দেশের মাঠে কোনো ক্যারিবিয়ান অধিনায়কের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডও এটি।
এর আগে গত পরশু বল হাতে দিনের শুরুটা বাংলাদেশের হয়েছিল দারুণ। ১ উইকেটে ১৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ গুটিয়ে যায় ১২৯ রানে। ৩৩ রানে ৬ উইকেট নিয়ে বিদেশের মাঠে বাংলাদেশের সেরা বোলিংয়ের কীর্তি গড়েন সাকিব। শেষ পর্যন্ত সেটা মিলিয়ে যেতে সময় লাগেনি ব্যাটিং ব্যর্থতায়, যার শুরুটা করেছিলেন তামিম ইকবাল। পরে তার পথ ধরেন ভালো খেলতে থাকা লিটন ও মুমিনুল। পরে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। তবে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে কিছুটা আশা জাগিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। পঞ্চম উইকেটে ৫৪ রানের জুটি ভেঙেছে চেনা পথে মুশফিকের বিদায়ে। হোল্ডারের ভেতরে ঢোকা বলে আবারও বোল্ড হলেন ব্যাট-প্যাডের মধ্যে বিশাল ফাঁক দিয়ে। কিছুক্ষণ পরেই ফেরেন নুরুল হাসান সোহান এলবিডবিউয়ের ফাঁদে পড়ে। তারপরও একপ্রান্ত আগলে রেখে সাকিব লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। চেইসকে বাউন্ডারি মেরে ক্যারিয়ারের ২৩তম হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৭৯ বলে। কিন্তু তার ইনিংসটি আর বেশিদূর এগোতে দেননি হোল্ডার। রিভার্স সুইং করেও ভেতরে ঢোকা বলে সাকিবের লেগ স্ট্যাম্পে লেগে বসে। তাতেই শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের আশা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৩৫৪/১০ ও ২য় ইনিংস: ১২৯/১০
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৪৯/১০ ও ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৩৫) ৪২ ওভারে ১৬৮ (তামিম ০, লিটন ৩৩, মুমিনুল ১৫, সাকিব ৫৪, মাহমুদউল্লাহ ৪, মুশফিক ৩১, সোহান ০, মিরাজ ১০, তাইজুল ১৩*, কামরুল ০, আবু জায়েদ ০; হোল্ডার ৬/৫৯, গ্যাব্রিয়েল ১/২৯, পল ১/৩৪, কামিন্স ০/২০, চেইস ২/১৪)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬৬ রানে জয়ী
সিরিজ: ২ ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২-০তে জয়ী
ম্যাচ ও সিরিজ সেরা: জেসন হোল্ডার