হ া ও য় া  ব দ ল: ঝালকাঠি

যা দেখবেন

 

কেমন হয় জীবনানন্দ দাশের স্বপ্নের ধানসিঁড়ি দেখার সুযোগ নিলে? যদিও নদীটি এখন মৃতপ্রায়। একই যাত্রায় সেই প্রাচীনপ্রথা সহমরণের চিহ্ন দর্শনের দেখা পেতে চান? তাহলে ব্যাগপ্যাটরা গুছিয়ে ঘুরে আসুন ঝালকাঠি থেকে।

ঝালকাঠিতে আরও অনেক কিছু দেখার আছে। প্রথমে বলতে হয়, রাজাপুর সাতুরিয়া জমিদারবাড়ির কথা। এটি দাঁড়িয়ে আছে প্রায় ১০০ বিঘা জমির ওপর। মোগল স্থাপত্যের আদলে তৈরি দালানের পাশাপাশি রয়েছে বেশ কয়েকটি পুকুর, ফুলের বাগান। সাতুরিয়ার মিয়াবাড়ি থেকে ঘুরে আসতে পারেন। মিয়াবাড়ি শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের নানাবাড়ি। এছাড়া সিদ্ধকাঠি জমিদারবাড়ি, গালুয়া পাকা মসজিদ, পোনাবালিয়া মন্দির ও বেশনাই মল্লিকের দিঘি, সিটি পার্কেরও যথেষ্ট আবেদন রয়েছে। কীর্তিপাশা জমিদারবাড়ির আকর্ষণও কম নয়। এখানেই একটি সহমরণ সমাধির চিহ্ন আজও রয়ে গেছে। দুঃখের স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে কুলকাঠিও (শহীদিয়া)। ব্রিটিশ অপশাসনের স্মৃতি বহন করছে এটি। এছাড়া ঘুরে বেড়াতে পারেন শীতলপাটি পল্লি ও তাঁতপল্লিতে।

যেভাবে যাবেন

 

ঝালকাঠিতে যেতে নদীপথ বেছে নেওয়া ভালো। তাতে আসা-যাওয়ার পথটুকু স্মৃতিময় হয়ে থাকবে। রাজধানীর সদরঘাট থেকে ঝালকাঠির দিকে পাল তোলে এমভি টিপু ১, সুরভী ৭, ৮ ও পারাবত ২, ৯, ১১। সদরঘাট থেকে রাত সোয়া ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যায় লঞ্চগুলো। সকাল ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে পৌঁছে যাবেন বরিশাল। সেখান থেকে ঝালকাঠি। এমভি টিপুর প্রথম শ্রেণি ডিলাক্সের ভাড়া দুই হাজার টাকা, ডাবল কেবিন এক হাজার ৪০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ৮০০ টাকা, ৩য় শ্রেণি ২০০ টাকা। সুরভী লঞ্চের ভিআইপি কেবিনের জন্য গুনতে হবে চার হাজার টাকা। এ ধরনের রুমে পাবেন বঙ্খাট, এলসিডি টেলিভিশন, সোফা, ওয়ার্ডরোব, এসি। সেমি ভিআইপি কেবিনে রয়েছে দুটি খাট, টেলিভিশন, ওয়ারড্রোব, ফ্যান, এসি। ভাড়া দুই হাজার ২০০ টাকা। ডাবল কেবিন এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা। সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ওঠানামা করে ৬৫০ থেকে ৮৫০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া সোফার ভাড়া ৪০০। ডেকে ২০০ টাকা। সবখানেই টেলিভিশন ও বাথরুম সুবিধা রয়েছে। লঞ্চগুলোয় ক্যান্টিন, ফাস্টফুড, সেলুন, ফার্মেসি ও দোকান সুবিধাদি রয়েছে। পারাবত লঞ্চের ভাড়া ও সুবিধা সুরভীর মতোই। লঞ্চগুলোয় নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি নেই।

সড়কপথও বেছে নিতে পারেন। এসি চেয়ার কোচ, হিনো চেয়ার কোচ ও নরমাল চেয়ার কোচ ছেড়ে যায় রাজধানীর গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে। এর মধ্যে প্রথম দুটি ফেরি পারাপার, বাকিটি লঞ্চ পারাপার। গাবতলী থেকে সুরভী ও সৌদিয়া পরিবহনের এসি বাস ছেড়ে যায়। নন-এসির মধ্যে রয়েছে সাকুরা, সোনারতরী, ঈগল ও হানিফ। নরমাল চেয়ার কোচের মধ্যে আছে সূর্যমুখী, সাউদিয়া, সুবর্ণ, রেখা ও শাপলা। সায়েদাবাদ থেকে ছেড়ে যায় সাকুরা, মেঘনা ও সুগন্ধা। এছাড়া গুলিস্তান থেকে ভেঙে ভেঙে যেতে পারেনÑপ্রথমে মাওয়া, এরপর লঞ্চে বা স্পিডবোটে করে কাওড়াকান্দি ঘাট। ওখান থেকে বাসে অথবা মাইক্রোবাসে বরিশাল। এরপর সোজা ঝালকাঠি।

ঘাটে পৌঁছেই ফেরি পেয়ে গেলে ৫ থেকে সাড়ে ৬ ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে যাবেন। লঞ্চ পারাপারে সময় লাগে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা। যাত্রাপথে ফেরিঘাটে খাওয়া-দাওয়া সেরে নিতে পারবেন।

যেখানে থাকবেন

থাকার জন্য কয়েকটি হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে ধানসিঁড়ি রেস্ট হাউজ, হালিমা বোর্ডিং ও হোটেল আরাফাত ভালো মানের। এছাড়া এলজিইডি, জেলা পরিষদ ও পল্লি বিদ্যুৎ অফিসের রেস্ট হাউজে উঠতে পারেন। থাকার জায়গাতে খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। বেশ কয়েকটি ভালো মানের খাবারের রেস্টুরেন্ট রয়েছে ঝালকাঠিতে।

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০