প্রকৃতি তার আপন খেয়ালে কতটা সৌন্দর্য বিছিয়ে রেখেছে, তা বুঝতে পটুয়াখালী যেতে হবে। সেখানকার প্রকৃতি আপনাকে আপনার করে নেবে নিশ্চিত। দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে পটুয়াখালী সাগরকন্যা হিসেবে খ্যাত।
যা দেখবেন
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদসৈকতের আবেদন অন্যরকম। কুয়াকাটায় রয়েছে ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রসৈকত। সূর্য ওঠা ও ডুবে যাওয়ার দৃশ্য কুয়াকাটার মতো অপরূপ আর কোথাও নয়। শুধু দেশে নয়, দক্ষিণ এশিয়ায় এ দৃশ্যের দেখা মেলে কেবল কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে। আরও দেখতে পাবেন রাখাইন পল্লী, ইকোপার্ক, চরগঙ্গামতি, সি ফিশ মিউজিয়াম, নারিকেল বীথি, ঝাউবন, ফাতরার চর প্রভৃতি। কুয়াকাটার বাইরে সোনারচর, সাপের খামার, কানাই বলাই দিঘি, ওয়াপদা কলোনি দিঘি, শ্রীরামপুর জমিদার বাড়ির আকর্ষণও কম নয়।
যেভাবে যাবেন
সড়কপথ ও নৌপথে যাওয়া যায় পটুয়াখালীতে। সড়কপথে এসি চেয়ার কোচ, হিনো চেয়ার কোচ ও নরমাল চেয়ার কোচ রয়েছে। এর মধ্যে এসি চেয়ার ও হিনো চেয়ার কোচগুলো ফেরি পার হয়ে যায়। বাকিগুলোয় গেলে লঞ্চে পার হতে হয়। এসি চেয়ার কোচের মধ্যে সুরভী ও সৌদিয়া পরিবহনই সেরা, ভাড়া ৬০০ টাকা থেকে শুরু। নন-এসি চেয়ার কোচের ভাড়া শুরু ৪০০ থেকে। সাকুরা, সোনারতরী, ঈগল ও হানিফ পরিবহন রয়েছে এ শ্রেণিতে। নরমাল চেয়ার কোচের মধ্যে সূর্যমুখী, সাউদিয়া, সুবর্ণ, শাপলা, মেঘনা, সুগন্ধা ও রেখা বেছে নিতে পারেন। ভাড়া ২৫০ টাকা থেকে শুরু। ভেঙে ভেঙেও যেতে পারেন। একে স্থানীয় ভাষায় বলা হয়, কাটা লাইন বা কাটা পথ। এভাবে যেতে চাইলে প্রথমে গুলিস্তান থেকে মাওয়াঘাট। এরপর লঞ্চ অথবা স্পিডবোটে কাওড়াকান্দি। কাওড়াকান্দি থেকে বাস বা মাইক্রোবাসে বরিশাল। সবশেষে বাসে বরিশাল থেকে পটুয়াখালী।
পটুয়াখালী যাওয়া ও আসার পথে যেটুকু সময় নদীতে কাটাবেন, তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে অনেকদিন। রাজধানীর সদরঘাট থেকে এমভি পারাবত, এমভি সৈকত, এমভি সুন্দরবন, এমভি সম্পদ, এমভি প্রিন্স অব বরিশাল, এমভি পাতারহাট, এমভি উপকূল ছেড়ে যায় পটুয়াখালীর উদ্দেশে। প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে ছেড়ে যায় লঞ্চগুলো। সকালে পৌঁছে যাবে পটুয়াখালীতে।
যেখানে থাকবেন
পটুয়াখালী জেলা সদরে থাকার জন্য বেশ কয়েকটি ভালো মানের সরকারি ডাকবাংলো রয়েছে। কুয়াকাটায় থাকা-খাওয়ার হোটেলের অভাব নেই। ফিরে আসার সময় স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে নিয়ে আসতে পারেন রাখাইনদের তৈরি তাঁতের কাপড় আর শামুক-ঝিনুকের তৈরি বাহারি অলঙ্কার, শোপিস।
Add Comment