‘একদিন চেংটু আসি দেওয়ানিক কইল বাহে, দেওয়ানির ব্যাটা হটো তো অমপুর যাই।’ রংপুরের লোকসমাজে সম্বোধনের ক্ষেত্রে ‘বাহে’ শব্দটির প্রচলন রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এ সম্বোধন সূত্রে অঞ্চলটির পরিচিতি হয়ে ওঠে ‘বাহের দ্যাশ’ নামে।
এখানকার মানুষের ঐতিহ্যগত বিশ্বাস, সংস্কার, চিন্তা-দর্শন, আচার-আচরণ, পেশা, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-পরিচ্ছদ, চিত্তবিনোদন, উৎসব প্রভৃতি মিলে গড়ে ওঠা সামগ্রিক জীবনযাপন পদ্ধতি দেখতে চাইলে ঘুরে আসুন রংপুর থেকে।
যা দেখবেন
জেলার শতরঞ্চি ও হাঁড়িভাঙ্গা আমের কদর রয়েছে সারা দেশে। তিস্তা, ঘাঘট, মানাস, আখিরা, মরা, টোপা, বুলাই, বুড়িখোড়া-চিকলী, দুধকুমার, করতোয়া, যমুনেশ্বরী প্রভৃতি নদ-নদী বিধৌত অঞ্চল রংপুর।
নয় গম্বুজ মসজিদ, তিন কাতারের মসজিদ, কাজিটারী মসজিদ, হজরত মাওলানা কেরামত আলী জৌনপুরী (রহ.)-এর মাজার ও মসজিদ, হযরত শাহজালাল বোখারীর মাজার, কুতুব শাহের মাজার, হাতীবান্ধা মাজার শরিফ, বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র, কেরামতিয়া মসজিদ, তাজহাট জমিদার বাড়ি (বর্তমানে জাদুঘর), কারমাইকেল কলেজ, কারমাইকেল কলেজ চত্বরের বিরল প্রজাতির কাইজেলিয়া বৃক্ষ, ভিন্নজগৎ, চিকনিরবিল, শিরীন পার্ক, আনন্দ মঠ, আনন্দনগর, পায়রাবন্দ জমিদারবাড়ি, মন্থনার জমিদারবাড়ি, দেবী চৌধুরানীর রাজবাড়ী, ইটাকুমারী রাজবাড়ী, চিড়িয়াখানা, রংপুর টাউন হল, কবি হেয়াত মামুদের মাজার, বেনারসি পল্লী, রায়পুর জমিদারবাড়ী, রাজা নীলাম্বরের বাড়ির ধ্বংসাবশেষ প্রভৃতি।
যেভাবে যাবেন
দেশের প্রায় সব স্থানের সঙ্গে রংপুরের যোগাযোগব্যবস্থা ভালো। রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে সড়কপথে রংপুরের উদ্দেশে অনেক বাস ছেড়ে যায়। রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বেশকিছু ট্রেন ছেড়ে যায়। জেলার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগব্যবস্থাও উন্নত।
যেখানে থাকবেন
সরকারি পর্যায়ে রয়েছে পর্যটন মোটেল ও জেলা পরিষদ ডাকবাংলো। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় রয়েছে হোটেল নর্থভিউ, ক্যাস্পিয়া, শাহ্ আমানত, গোল্ডেন টাওয়ার, বিজয়, চাঁদিমা, ফ্রেন্ডস, রাজ, সাতমাথা, সান, বনফুল, রজনীগন্ধা, আল-মদিনা, রয়েল, শাপলা, মহানগর, ডায়মন্ড, নিরিবিলি, তিলোত্তমা, ড্রিম প্যালেস, মুন রেস্টহাউজ, সান্ত¡না গেস্টহাউজ প্রভৃতি।
যা খাবেন
দেশের প্রায় সব ধরনের খাবার পাওয়া যায় রংপুরে। এখানকার জনপ্রিয় খাবার সিঁদল। খাবারটি তৈরি হয় শুঁটকি মাছ, কচুসহ নানা উপাদানে। মাছ, সবজির সঙ্গে রান্না অথবা ভর্তা করে খেতে হয় সিঁদল। খাবারের কয়েকটি স্থানের নাম জেনে নিতে পারেনÑশিঙ্গাড়া হাউজ, পুষ্টি, ঘোষ ভাণ্ডার, জলযোগ, নিরঞ্জন মিষ্টিমুখ, চটপটি হাউজ, নাড়–র হোটেল, মৌবন, খালেক হোটেল, বৈশাখী, চাঁদনি, পারভেজ ও স্টার হোটেল, সিসিলি, ঢাকা ফাস্টফুড, নর্থ ভিউ, মিড-নাইট সান, ক্যাস্পিয়া, খেয়া পার্ক রেস্টুরেন্ট প্রভৃতি।
Add Comment