কে এম রুবেল, ফরিদপুর: বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে শুরু হয় দেশের সর্বাধুনিক মহাসড়ক ‘ঢাকা-ভাঙ্গা’ এক্সপ্রেসওয়ের টোল গ্রহণ। এতে সদ্য চালু হওয়া স্বপ্নের পদ্মা সেতুকে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করা ওই ২০ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে গিয়ে মধ্যরাত থেকেই বিপত্তিতে পড়ে যাত্রীরা। ভাঙ্গার বগাইল টোল প্লাজার ৭টি বুথ চালুর পর গতকাল শুক্রবার দুপুর থেকে স্বাভাবিক হয় যান চলাচল।
সামনে ঈদ এবং গতকাল ছুটির দিন হওয়ায় রাজধানী থেকে দক্ষিণে ছুটছে মানুষ। এরই মধ্যে প্রস্তুতি ছাড়াই কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক্সপ্রেসওয়ে) সড়কে টোল আদায় শুরু করলে ঘটে বিপত্তি, এন্ট্রি ও এক্সিট দুই পাশের সড়কেই জমে যায় সারি সারি যানবাহন। রাত ২টায় শুরু হওয়া এ যানযট নিরসন করতে সময় লেগে যায় ১০ ঘণ্টা, ততক্ষণে ভোগান্তির শেষ ছিল না হাজারো মানুষের।
রাজধানী থেকে ছেড়ে যাওয়া পরিবহনগুলো শুরুতে ৩টি লেন দিয়ে গেলেও গতকাল শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে চালু হওয়া ৭টি লেনের ৫টি দিয়েই টোলপ্লাজা পেরিয়ে যায় সেগুলো, ফলে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার বগাইল টোল প্লাজায় কর্মরত এক্সপ্রেসওয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুমিনুর রহমান জানান, টোল প্লাজার ১০টি লেনের ৭টি ইতোমধ্যে উš§ুক্ত করে দেয়া হয়েছে, তাতেই পরিস্থিতি পুরো নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। টোল আদায়ের বুথগুলো স্থাপনে কয়েক ঘণ্টা বিলম্ব হওয়ার কারণে যাত্রীদের দীর্ঘ সময়ের ভোগান্তির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এক্সপ্রেস ওয়েতে টোল আদায়ের জন্য আর যানযট সৃষ্টি হবে না।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি হামিদুর রহমান বলেন, শুক্রবার সকাল থেকেই বগাইল টোল প্লাজায় কর্মরত এক্সপ্রেসওয়ের কর্মীদের সব ধরনের সহায়তা করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগলেও কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এর আগে ‘ঢাকা-ভাঙ্গা’ এক্সপ্রেসওয়ের ভাঙ্গার বগাইল টোল প্লাজা এলাকায় চার কিলোমিটার যানজট তৈরি হয়। টোল আদায়ে ধীরগতির কারণে ঢাকা থেকে ভাঙ্গাগামী যানবাহনগুলোর এ সারি তৈরি হয়। এ ছাড়া ভাঙ্গা থেকে ঢাকাগামী যানবাহনগুলোরও এক কিলোমিটারের বেশি যানজট দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে) সড়কে এ টোল আদায় শুরু হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে ভাঙ্গাগামী ৫৫ কিলোমিটার এ এক্সপ্রেসওয়ের নাম দেয়া হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক্সপ্রেসওয়ে। পদ্মা সেতু পার হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা এলাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার এই মহাসড়ক ব্যবহার করলে একটি বড় বাসকে দিতে হবে ২০০ টাকা, মিনিবাস ১১০ টাকা, মাইক্রোবাস ৯০ টাকা, প্রাইভেট কার ৫৫ টাকা, মোটরবাইক ১০ টাকা। এ ছাড়া ট্রাকের ক্ষেত্রে ট্রেইলর ট্রাকের (সবচেয়ে বড় ট্রাক) টোল ধরা হয়েছে ৬৭৫ টাকা, ভারী ট্রাককে ৪৪০ টাকা ও মাঝারি আকারের ট্রাককে ২২০ টাকা দিতে হবে।