ইকুইটি প্রপার্টিস ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড

১০ বছরেও কাজ শুরু করতে পারেনি, উল্টো মামলা

সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মহানগরীর দেওয়ানহাটে ১৫ কাঠা জমির ওপর ১৫ তলার বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের চুক্তি করেছিল ইকুইটি প্রপার্টিজ ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। এ জন্য ভূমি মালিকদের সঙ্গে ২০১০ সালে আমমোক্তারনামা চুক্তিও করেছিল। ২০১৬ সালে ৪২ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। প্রয়োজনে আরও ছয় মাস নিতে পারবে এমন উল্লেখ ছিল চুক্তিতে। কিন্তু গত ১০ বছরে দৃশ্যমান কোনো কাজ শুরুই করতে পারেনি ইকুইটি প্রপার্টিজ। উল্টো ভূমি মালিকদের বিরুদ্ধে করেছে নালিশি মামলা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের প্রথম সারির আবাসন কোম্পানি ইকুইটি প্রপার্টিজ লিমিটেড। ২০১০ সালে যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম মহানগরের আগ্রাবাদ শেখ মুজিব রোড বাণিজ্যিক এলাকায় ১৫ কাঠার ওপর ১৫ তলার ট্রেড সেন্টার নির্মাণের চুক্তি করে প্রতিষ্ঠানটি। চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০১৬ সাল পর্যন্ত। কিন্তু এরপর সাড়ে চার বছর পেরিয়ে গেলেও চুক্তি অনুসারে কাজ শুরু করতে পারেনি।

চুক্তির মেয়াদ পেরিয়ে গেছে। একই সঙ্গে প্রস্তাবিত প্রকল্পে সিডিএর অনুমোদনও মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। এছাড়া নির্মাণকাজও শুরু করেনি ইকুইটি প্রপার্টিজ। তবে প্রতিষ্ঠানটি এখনও জমি দখলে রেখেছে। এর মধ্যে জমির মালিকদের মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। ইকুইটির ব্যর্থতায় হতাশ হয়ে জমির মালিকদের একজন মীর আকতার হোসেন জমিটির উন্নয়ন ও ব্যবহারের বিকল্প চিন্তা করছেন।

মীর আকতার হোসেনের পক্ষে আইনজীবী আকতার কামাল শেয়ার বিজকে বলেন, ২০১০ সালে দেওয়ানহাট শেখ মুজিব রোড বাণিজ্যিক এলাকায় ১৫ কাঠার ওপর ১৫ তলার ট্রেড সেন্টার নির্মাণের চুক্তি করেছিল ভূমি মালিক ও ইকুইটি প্রপার্টিজ লিমিটেড, যার মেয়াদ ছিল ২০১৬ সাল পর্যন্ত। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে আবাসন কোম্পানিটি কাজই শুরু করতে পারেনি। সুতরাং আইন অনুসারে উভয়পক্ষের মধ্যে আইনগত সম্পর্কও নেই। যেহেতু আইনগত সম্পর্ক নাই, সেহেতু এ জমিতে ইকুইটি প্রপার্টিজ লিমিটেডের সব কার্যক্রম অবৈধ। এখন ফ্ল্যাট বা বাণিজ্যিক স্পেস বিক্রয়ের চেষ্টা করলে তাও অবৈধ হবে। এতে ক্রেতারা প্রতারিত হবেন।

অপরদিকে ইকুইটি প্রপার্টিজ লিমিটেডের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আরিফ উদ্দিন আইনগত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, ইকুইটি ট্রেড সেন্টার নামের দেওয়ানহাটের এ প্রকল্পে চুক্তি অনুসারে কোম্পানি ভূমি মালিকদের নগদ টাকাসহ অনেক টাকা দিয়েছেন। প্রকল্পের কাজও চলমান। এর মধ্যে ভূমি মালিকদের একাংশ আইনগত কারণ ছাড়া অন্যান্যভাবে প্রকল্প বাতিলের অপতৎপরতায় লিপ্ত। আমরা চলতি বছর জেলা জজ আদালতে নালিশি মামলাও করেছি। তাদের (জমির মালিক) কার্যক্রমে কোনো আইনগত ভিত্তি নাই।

মীর আকতার হোসেন শেয়ার বিজকে বলেন, যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে আবাসন খাতের প্রতিষ্ঠান ইকুইটির সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়। কিন্তু চুক্তি অনুসারে তারা কাজই শুরু করতে পারেনি। অথচ ২০১০ সালে আমমোক্তারনামা হয়েছিল। আর ২০১৬ সালের কাজ শুরু করার কথা ছিল, যা ২০২০ সালে পুরোপুরি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একটি ইটও তারা লাগায়নি। আমাদের এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জমি পুকুর বানিয়ে রেখেছে। অন্তত কিছু কাজ হলে আমরা ফ্ল্যাট কিংবা কমার্শিয়াল স্পেস বিক্রয় করে চলতে পারতাম। তারা আমাদের থাকার বাড়ি ভাড়াও দেয়নি। আমার এক ভাই ও বোন এর মধ্যে মারা গেছেন। তাদের এতিম সন্তানরাও অনেক কষ্ট পাচ্ছে। তখন আমরা ছিলাম তিনজন ওয়ারিশ, এখন ২৭ জন। এসব বিষয়ে কথা বলতে গেলে তারা দেখাও দেয় না। উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

এ বিষয়ে ইকুইটি প্রপার্টিজ লিমিটেডের পরিচালক মাহফুজুল হক শেয়ার বিজকে বলেন, আসলে বিষয়টা তো আমি দেখি না। আমাদের হেড অব বিজনেস দেখেন। উনি আপনাকে ফোন করে সব বুঝিয়ে দেবেন। এ বিষয়ে হেড অব বিজনেসের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে ইকুইটি প্রপার্টিজ লিমিটেড আবাসন কোম্পানি হিসেবে যাত্রা করে। নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি প্রথম আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে যাত্রা করা কোম্পানিটি এ পর্যন্ত ৪২টি প্রকল্প নেয়। এর মধ্যে কিছু প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে, আর কিছু প্রকল্পের কাজ চলমান। ,

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০