Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 2:26 pm

১০ মাসে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৭৫৮

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে চলতি বছর জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে এক হাজার ৬৫৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এক হাজার ৭৫৮ জন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন এক হাজার ১২৩ জন।

যারা নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে এক হাজার ৩২৭ জন ১৪ থেকে ৪৫ বছর বয়সী। দুর্ঘটনায় ৭২ শিক্ষক ও ৬৬৯ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ১৫১ পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহত মানুষের আট দশমিক ৫৮ শতাংশ।

গতকাল রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। দেশের সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ৩৪৯টি, মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৮৩টি, মোটরসাইকেলে অন্য যানবাহনের চাপা ও ধাক্কা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে ৭১৫টি এবং অন্যান্য কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে ছয়টি।

প্রতিবেদনে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে কিশোর-যুবকদের বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালানো; অতি উচ্চগতির মোটরসাইকেল ক্রয় এবং ব্যবহারে সহজলভ্যতা ও বাধাহীন সংস্কৃতি; ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির শিথিলতা; বাস, ট্রাক, পিকআপ, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস প্রভৃতি দ্রুতগতির যানবাহনের বেপরোয়া গতি; চালকদের অদক্ষতা ও অস্থিরতা; ইজি-বাইক-সিএনজিচালিত অটোরিকশা-নসিমন-ভটভটি প্রভৃতি স্বল্পগতির যানবাহনের অপরিকল্পিত ও অদক্ষ হাতে চালানো; সড়ক-মহাসড়কে ডিভাইডার না থাকা; সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা না থাকা; পারিবারিকভাবে সন্তানদের বেপরোয়া আচরণকে প্রশ্রয় দেয়া প্রভৃতি।

প্রতিবেদনে ১৩টি সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশগুলো হলোÑকিশোর-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে; মাত্রাতিরিক্ত গতিসম্পন্ন মোটরসাইকেল উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; গণপরিবহন চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; মহাসড়কে মোটরসাইকেলের জন্য আলাদা লেন তৈরি করতে হবে এবং স্বল্পগতির স্থানীয় যানবাহন বন্ধ করতে হবে; স্বল্পগতির যানবাহনের জন্য মহাসড়কের পাশাপাশি সার্ভিস রোড নির্মাণ করতে হবে; পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; গণপরিবহন উন্নত ও সহজলভ্য করে মোটরসাইকেল নিরুৎসাহিত করতে হবে; রেল ও নৌ-পথ সংস্কার এবং বিস্তৃত করে সড়কপথের ওপর থেকে ট্রাক-কাভার্ডভ্যানের মতো পণ্যবাহী যানবাহনের চাপ কমাতে হবে; সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে গণমাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে এবং ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।