নিজস্ব প্রতিবেদক: রানা প্লাজা ধসে পড়ে সহস্রাধিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ভবনটির মালিক সোহেল রানার জামিন শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, আমরা যখন বিচার করি তখন আমাদের ভাবতে হয় যে, ওই ঘটনায় মারা যাওয়া প্রায় ১ হাজার ১০০ লাশ আমাদের সামনে। তাদের আত্মীয়স্বজনরাও ন্যায়বিচার চান। তাই এখনই সোহেল রানাকে জামিন দিচ্ছি না।
গতকাল সোমবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগে সোহেল রানার জামিন বিষয়ে শুনানি হয়।
শুনানির শুরুতে রানার আইনজীবী কামরুল ইসলাম জামিন চেয়ে আদালতে বলেন, মাই লর্ড, দশ বছর ধরে তিনি কারাগারে আছেন। তাই এখন তাকে জামিন দিন। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, আরও ছয় মাস থাকুক। এরপর দেখা যাবে।
আইনজীবী কামরুল ইসলাম আবার ন্যায় বিচারের কথা বলে জামিন প্রার্থনা করলে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, আমরা যখন বিচার করি তখন আমাদের এভাবে ভাবতে হয় যে, এ ঘটনায় (রানা প্লাজা ধস) মারা যাওয়া প্রায় ১ হাজার ১০০ লাশ আমাদের সামনে। আর তাদের আত্মীয়স্বজনরা আরেক পাশে দাঁড়িয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে ন্যায়বিচার চাইছেন।
এরপর আপিল বিভাগ সোহেল রানার জামিন বিষয়ে শুনানি ছয় মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।
এর আগে গত ৮ মে রানা প্লাজা ধসে পড়ে সহস্রাধিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ভবনটির মালিক সোহেল রানাকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন ১০ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। ওইদিন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গত ৬ এপ্রিল এ মামলায় সোহেল রানাকে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরে ৯ এপ্রিল হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করে আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত। ফলে রানার মুক্তিও স্থগিত হয়ে যায়।
তার আগে গত বছরের মার্চে রানাকে কেন জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। ওই রুলকে যথাযথ ঘোষণা করে গত ৬ এপ্রিল তাকে জামিন দেয়া হয়েছিল।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা রানা প্লাজা ধসের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রায় ১ হাজার ৩০০ মানুষের মৃত্যু হয়। যাদের প্রায় সবাই ছিলেন পোশাক কারখানার শ্রমিক। এ ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি ভবনের মালিক সোহেল রানা।