১১৬ ধর্মীয় বক্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ১১৬ ধর্মীয় বক্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে গণকমিশন নামে একটি সংগঠনের জমা দেয়া তালিকা আমলে নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এজন্য গত মঙ্গলবার সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি যাচাই-বাছাই টিম গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে টিম কাজ শুরু করেছে। টিমের অন্য দুই সদস্য হলেনÑউপপরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহীম ও উপপরিচালক আহসানুল কবীর পলাশ। যাচাই-বাছাইয়ে অভিযোগের সপক্ষে সত্যতা বা তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেলে কমিটি তাদের পর্যবেক্ষণ কমিশনের কাছে উপস্থাপন করবে। পরে কমিশন বিষয়বস্তু বিশদ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। বৃহস্পতিবার দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।

আলেমদের আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ায় তা দূর করতে গতকাল প্রেস ব্রিফিংয়ে দুদক সচিব বলেন, সম্প্রতি ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ২২১৫ পাতার একটি শ্বেতপত্র দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করে। শ্বেতপত্রটি পরীক্ষা করে সংক্ষিপ্তসার কমিশনে উপস্থাপন করার জন্য দুদক থেকে একটি অভ্যন্তরীণ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ধর্মীয় বক্তা বা আলেমদের আর্থিক লেনদেন অনুসন্ধান সংক্রান্ত কোনো কার্যক্রম এ কমিটি শুরু করবে না। এ ধরনের কোনো দায়িত্ব কমিটিকে দেয়া হয়নি। এমনকি কমিশন থেকে কোনো অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তও হয়নি। এ কমিটি কেবল শ্বেতপত্রটি পরীক্ষা করে তাদের পর্যবেক্ষণ কমিশনের কাছে উপস্থাপন করবে। পরে কমিশন বিষয়বস্তু বিশদ পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

সচিব আরও বলেন, দুদকে সরাসরি পত্রযোগে অথবা ১০৬ নম্বর হটলাইনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নিয়মিত বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যায়। অভিযোগ পাওয়ার পর প্রাথমিকভাবে তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করা হয়। অভিযোগ পরীক্ষায় প্রাথমিকভাবে কোনো দুর্নীতির উপাদান বা তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেলে তা আইনের শিডিউলভুক্ত হলেই অনুসন্ধানের অনুমোদনের জন্য কমিশনে উপস্থাপন করা হয়। এটিই দুদকে অভিযোগ প্রাপ্তি ও নিষ্পত্তির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। 

এর আগে গত ১১ মে এক হাজার মাদ্রাসার তথ্য-উপাত্তের ওপর তদন্ত করে ১১৬ ধর্মীয় বক্তার দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তালিকা জমা দিয়েছিল ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সমন্বয়ে গঠিত গণকমিশন। দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লার কাছে এ শ্বেতপত্র ও ১১৬ সন্দেহভাজন ধর্মীয় বক্তার তালিকা তুলে দেয়া হয়। গণকমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৩ মে দুদক চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপি দেন ইসলামি কালচারাল ফোরাম বাংলাদেশের নেতারা। যেখানে ১৯৯২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আয়-ব্যয়ের হিসাব ও তহবিলের উৎস, কমিটির নেতাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব এবং গণকমিশনের শ্বেতপত্রসহ অতীতে তাদের প্রকাশিত শ্বেতপত্রের আর্থিক জোগান ও আয়-ব্যয় সম্পর্কে অনুসন্ধান করার অনুরোধ করেন তারা। স্মারকলিপি দেয়া শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে ইসলামি কালচারাল ফোরামের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেছিলেন, নি¤œবিত্ত ও নি¤œ-মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীরা কওমি মাদ্রাসা থেকে শিক্ষা নেয়। সরকারি অনুদান না নিয়ে আমরা শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষিত জাতি গঠনে আমরা নিরবচ্ছিন্ন কাজ করে যাচ্ছি। অথচ আমাদের উৎসাহ না দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে তারা এসব হীন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে সংঘাত ঘটাতে এসব কর্মকাণ্ড করা হচ্ছে। যারা আমাদের রাজপথে নামতে বাধ্য করছে, তাদের অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য আমরা দুদককে আহ্বান জানিয়েছি। পাশাপাশি তাদের আয়-ব্যয় ও অর্থের উৎস খুঁজে বের করতে আমরা দুদককে অনুরোধ করেছি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০