নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম আবারও বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বেসরকারি খাতে ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজি মূসকসহ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য এক হাজার ১৭৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ২৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল বিইআরসি এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে জানানো হয়, এলপিজি গ্যাসে কেজিপ্রতি আট টাকা বেড়েছে। বেসরকারি পর্যায়ে ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য এলপিজি মূসকসহ কেজিপ্রতি ৯৪ দশমিক ৯৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০৩ টাকা ৩১ পয়সা করা হয়েছে। ফলে জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রুয়ারিতে গ্রাহককে ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজিতে ৬২ টাকা বেশি দিতে হবে। সে হিসাবে ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজির মূসকসহ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হবে এক হাজার ২৪০ টাকা।
ঘোষণা অনুযায়ী, মোটরগাড়ির জন্য অটোগ্যাসের দামও বর্তমানে মূসকসহ প্রতি লিটার ৫৪ দশমিক ৯৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫৭ দশমিক ৮১ টাকা করা হয়েছে।
জানা গেছে, এলপিজি তৈরির মূল উপাদান প্রপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। প্রতি মাসে এলপিজির এ দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো। এটি সৌদি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে পরিচিত। এই সৌদি সিপিকে ভিত্তি মূল্য ধরে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে বিইআরসি।
সৌদি সিপি অনুসারে ফেব্রুয়ারিতে প্রোপেন ও বিউটেনের দাম যথাক্রমে টনপ্রতি ৭৭৫ ও ৭৭৫ ডলার, মিশ্রণ অনুপাত ৩৫:৬৫ বিবেচনায় ফেব্রুয়ারির জন্য এই নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রতি কেজি এলপিজির সর্বোচ্চ মূল্য ১০৩ টাকা ৩৪ পয়সা ধরে ফেব্রুয়ারিতে সাড়ে পাঁচ কেজির সিলিন্ডারের দাম ৫৬৮ টাকা, সাড়ে ১২ কেজির দাম এক হাজার ২৯২ টাকা, ১৫ কেজির দাম এক হাজার ৫৫০ টাকা, ১৬ কেজির দাম এক হাজার ৬৫৩ টাকা এবং ১৮ কেজির দাম এক হাজার ৮৬০ টাকা।
এছাড়া ২০ কেজি এলপিজির দাম দুই হাজার ৬৭ টাকা, ২২ কেজির দাম দুই হাজার ২৭৩ টাকা, ২৫ কেজির দাম দুই হাজার ৫৮২ টাকা, ৩০ কেজির দাম তিন হাজার ১০০ টাকা, ৩৩ কেজির দাম তিন হাজার ৪১০ টাকা, ৩৫ কেজির দাম তিন হাজার ৬১৭ টাকা এবং ৪৫ কেজির দাম চার হাজার ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে উৎপাদন পর্যায়ে ব্যয়ের পরিবর্তন না হওয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির উৎপাদিত এলপিজির দাম পরিবর্তন করা হয়নি।
বিইআরসির চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এরই মধ্যে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহকারী সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও মার্জিন বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। আবার পেট্রোবাংলা প্রস্তাব দিয়েছে গ্যাসের খুচরা মূল্য বাড়ানোর। তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে এবং এসব প্রস্তাবের ওপর পর্যালোচনা, কারিগরি কমিটির বিশ্লেষণ ও গণশুনানি শেষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবার এলপিজির দাম সমন্বয় করা হলেও সরকারের বেঁধে দেয়া দাম মানেন না ব্যবসায়ীরা। খুচরা পর্যায়ে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয় এলপিজি সিলিন্ডার। ফলে বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে সাধারণ ভোক্তাদের। আর মুনাফা লুটছে কোম্পানি, ডিলার আর খুচরা ব্যবসায়ীরা।