১৩ মাস পর রপ্তানি প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা ১৩ মাস ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির পর দেশের রপ্তানি কমেছে। সদ্য বিদায়ী সেপ্টেম্বরে ৩৯০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কম। অবশ্য সার্বিকভাবে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের রপ্তানি ইতিবাচক ধারাতেই আছে। অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রয়েছে। এ সময়ে ১ হাজার ২৪৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত বছরের প্রথম তিন মাসে রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ১০২ কোটি ডলারের পণ্য।

গত মাসে সার্বিক রপ্তানি কমেছে মূলত পোশাকের রপ্তানি কমে যাওয়ায়। গত মাসে ৩১৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ৭ দশমিক ৫২ শতাংশ কম। গত মাসে ওভেন ও নিট উভয় ধরনের পোশাক রপ্তানিই হ্রাস পেয়েছে। তবে সার্বিকভাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে পোশাক রপ্তানিতে ১৩ দশমিক ৪১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রয়েছে।

তৈরি পোশাকের রপ্তানি নিয়ে উদ্যোক্তারা কয়েক মাস ধরে বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোয় মূল্যস্ফীতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সেখানকার মানুষ গাড়ির জন্য জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের বাইরে কেনাকাটা কমিয়ে দিয়েছেন। সে কারণে বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান দু-তিন মাস ধরে নতুন ক্রয়াদেশ কম দিয়েছে। ক্রয়াদেশের পণ্য প্রস্তুত হওয়ার পরও জাহাজীকরণের অনুমতি দিচ্ছিল না অনেক প্রতিষ্ঠান।

রপ্তানি আয়ের এ হালনাগাদ পরিসংখ্যান গতকাল রোববার প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে কৃষিপণ্য, হিমায়িত খাদ্য, হস্তশিল্প, বাইসাইকেল, আসবাব রপ্তানি কমে গেছে।

তৈরি পোশাকের পর সবচেয়ে বেশি ৩৫ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল রপ্তানি হয়েছে। গত বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি ২৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি। তৃতীয় শীর্ষ রপ্তানি হয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে ৩২ কোটি ৭৯ লাখ ডলারের। গত বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় এ খাতের রপ্তানি ২০ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেশি।

২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম তিন মাসে মোট ১ হাজার ২৪২ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি। ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ১০২ কোটি ১৯ লাখ ডলারের পণ্য।

২০২১-২২ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো সেবা ছাড়া শুধু পণ্য রপ্তানি থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার আয় আসে; মোট রপ্তানি হয় পাঁচ হাজার ২০৮ কোটি ২৬ লাখ ডলারের পণ্য, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি।

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পশ্চিমা দেশগুলোয় মূল্যস্ফীতির ধাক্কার কারণে ক্রয়াদেশ কমতে থাকায় বেশকিছু দিন থেকেই রপ্তানিকারকরা বিশেষ করে পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা সামনের দিনগুলোয় রপ্তানিতে ধীরগতির ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। গত সেপ্টেম্বরের রপ্তানি আয়েই এর প্রভাব দেখা গেল।

কভিড মহামারির ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের রপ্তানিতে ১১ দশমিক ১৯ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। এরপর থেকেই প্রবৃদ্ধিতে একের পর এক রেকর্ড হয়েছে। টানা কয়েক মাস একক মাসে রপ্তানি আয় ৪০০ কোটির বেশি ছিল। এর মধ্যে গত ২০২১-২২ অর্থবছরের অক্টোবরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬০ শতাংশ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০