১৫তম চুয়েট দিবস

সাইফ উল আলম: অন্য দিনগুলোর চেয়ে একেবারেই আলাদা ছিল দিনটি। ওইদিন আনন্দ শোভাযাত্রা, রক্তদান কর্মসূচি, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, শিক্ষা-গবেষণার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের তথ্যচিত্র প্রদর্শনী, ডকুমেন্টেশন প্রদর্শন, আলোচনা সভা, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান প্রভৃতির আয়োজন করা হয়। বলছি চুয়েট বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কথা। গত ১৯ সেপ্টেম্বর পালিত হয় দিনটি।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) বাংলাদেশে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি

শিক্ষা-গবেষণার একটি অন্যতম শীর্ষ প্রতিষ্ঠান। প্রকৌশল ও প্রযুক্তি শিক্ষা বিস্তারের উদ্দেশ্যে এই প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে ১৯৬৮ সাল থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজটির প্রতিষ্ঠাকালে উদ্দেশ্য ছিল দেশের প্রকৌশল ও প্রযুক্তির শিক্ষাকে আরও এগিয়ে নেওয়া। তখন কলেজটির শিক্ষা কার্যক্রম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির অধীনে পরিচালিত হতো। প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ভার ন্যস্ত ছিল মন্ত্রণালয়ের হাতে। নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছিল গণপূর্ত অধিদফতরের অধীনে। কলেজটির সার্বিক পরিচালনা ত্রিপক্ষীয় কর্তৃপক্ষের অধীনে থাকায় যথাযথ সমন্বয়ের অভাবে ও বিভিন্ন জটিল সমস্যার আবর্তে পড়ে প্রতিষ্ঠানটির মুখ্য উদ্দেশ্য অর্জন ব্যাহত হয়। সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে সরকার ১৯৮৬ সালে দেশের চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে স্বায়ত্তশাসিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (বিআইটি) রূপান্তরিত করে। সীমিত পরিসরে স্বায়ত্তশাসন লাভের পরও বিভিন্ন প্রশাসনিক জটিলতার কারণে বিআইটি, চট্টগ্রাম নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকরিসংক্রান্ত অসুবিধা ও উন্নতমানের যন্ত্রপাতির অপ্রতুলতা গবেষণা কার্যক্রমের জন্য বাধা হয়ে পড়েছিল। অবশেষে তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার উৎকর্ষের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিআইটি, চট্টগ্রাম ১ সেপ্টেম্বর ২০০৩ চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) নামে যাত্রা শুরু করে।

শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কসংলগ্ন প্রায় ১৭১ একর জমির ওপর মনোমুগ্ধকর নৈসর্গিক পরিবেশে চুয়েট ক্যাম্পাস অবস্থিত। চুয়েটে পাঁচটি অনুষদ, ১৫টি বিভাগ, তিনটি ইনস্টিটিউট, তিনটি গবেষণা সেন্টার ও পাঁচটি আবাসিক হল (চারটি ছাত্র ও একটি ছাত্রী হল) রয়েছে। শিক্ষার্থীসংখ্যা প্রায় চার হাজার ৫০০ জন। চুয়েটের অনুষদগুলো হলোÑপুরকৌশল অনুষদ, যন্ত্রকৌশল অনুষদ, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদ, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদ এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ। এখানে প্রতিবছর স্নাতক কোর্সে ৭০০ আসনের বিপরীতে চারটি অনুষদের অধীনে ১০টি বিভাগে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেক্ট্রনিকস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল অ্যান্ড ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকাট্রনিকস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্কিটেকচার, আরবান অ্যান্ড রিজিওনাল প্ল্যানিং প্রভৃতি।

চুয়েটের ১৫তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ফর ম্যানকাইন্ড’। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়–য়া। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। সভাপতিত্ব করেন চুয়েট জাতীয় দিবস উদ্যাপন কমিটির সভাপতি ও পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০