Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 11:06 am

১৫ এপ্রিলের পর গণপরিবহনে সিটিং গেটলক থাকবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে গণপরিবহনে ভাড়ার নৈরাজ্য ঠেকাতে সিটিং, গেটলক কিংবা স্পেশাল সার্ভিস বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে পরিবহন মালিক সমিতি। আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে রাজধানীতে এ ধরনের সার্ভিস থাকবে না। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

ঢাকার বিভিন্ন রুটের পরিবহন মালিক এবং পরিবহন কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভার পর এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ওই সংবাদ সম্মেলনে জানান ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে সিটিং-গেটলক কিংবা স্পেশাল সার্ভিস নামে কোনো সার্ভিস চলতে পারবে না। প্রতিটি বাসকে রুট পারমিট অনুযায়ী চলতে হবে। ভাড়া সরকার নির্ধারিত চার্ট অনুযায়ী আদায় করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, সিটিং সার্ভিসের নামে যাত্রীদের সঙ্গে এতদিন প্রতারণা করা হয়েছে। এটা চলতে পারে না। বর্তমানে অপ্রতুল গণপরিবহনের মধ্যে এ ধরনের সার্ভিস যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠেছে। আগে বিভিন্ন সময়ে সরকারের মন্ত্রীরাও এর বিরুদ্ধে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন কিন্তু কাজ হয়নি।

এদিকে বাস্তবে দেখা যায়, গায়ে ‘সিটিং সার্ভিস’ লেখা থাকলেও অধিকাংশ বাসেই আসনের অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। নিয়ম থাকলেও যাত্রীদের টিকিট দেওয়া হয় না, আদায় করা হয় বাড়তি ভাড়াও। এ নিয়ে যাত্রীদের বাজে আচরণেরও মুখোমুখি হতে হয় অনেক সময়। রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থায় ‘দীর্ঘদিন ধরে চলা অনিয়ম’ বন্ধে এবার উদ্যোগী হয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান এনায়েত উল্লাহ।

এনায়েতুল্যাহ জানান, ১৫ তারিখের পর যাত্রীদের কাছ থেকে কোনোভাবেই অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া যাবে না। ভাড়ার তালিকা বাসের ভেতর দৃশ্যমান স্থানে টানিয়ে রাখতে হবে। ছাদের ওপরে ক্যারিয়ার সাইট অ্যাঙ্গেল ও ভেতরের অতিরিক্ত আসন খুলে ফেলতে হবে। প্রতিটি বাস ও মিনিবাসে নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা আসন সংরক্ষণ করতে হবে। রঙচটা, রঙবিহীন, জরাজীর্ণ বাস মেরামত করে রাস্তায় নামাতে হবে। এর জন্য এক মাস সময় দেওয়া হবে। এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা পরিদর্শন করা হবে।

এদিকে আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিআরটিএ এবং ডিএমপিকে চিঠি দেওয়া হবে বলেও জানান এনায়েতুল্যাহ। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে কি না, তা দেখতে সমিতির কয়েকটি দল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে কাজ করবে বলে জানান তিনি।

সম্মেলনে ঢাকায় পরিবহন খাতে প্রচুর চাঁদাবাজির অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, কোম্পানির নামে বাস চলাচল শুরুর পর থেকেই চাঁদাবাজি বেড়েছে। একজন মালিকের গাড়ি থাক বা না থাক ওই মালিকের অধীনে চাঁদা দিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। এছাড়া ডিএমপিকে প্রতিদিন ১০৭টি বাস রিকুইজিশনে দিতে হয়। এজন্য পুলিশ বাস মালিককে দেয় ৩০০ টাকা। এ টাকায় শ্রমিকের বেতন দেওয়া যায় না। মালিকের কিছুই থাকে না।

তিনি আরও বলেন, রোড পারমিটে সিটিং সার্ভিস বলে কোনো শব্দ নেই। অফিস আওয়ারে হাজার হাজার যাত্রী রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে, তখন গাড়ি সিটিং বলে চলে যায়। প্রয়োজনে তখন যাত্রীরা যেতে পারছে না। কিন্তু অসময়ে আবার সিটের অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া হয়। আবার সিটিংয়ের নামের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার সময় পুরো পথের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে কিন্তু সিট ফাঁকা হলেই রাস্তা থেকে যাত্রীও তোলা হচ্ছে।