নিজস্ব প্রতিবেদক : মাছের উৎপদন ১৬ বছরে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেন, সরকারের মৎস্যবান্ধব বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরে মৎস্য উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৮৬ লাখ ২১ হাজার মেট্রিক টন, যা আগের বছরের চেয়ে ১ লাখ ১৮ হাজার মেট্রিক টন বেশি। ২০০৪-০৫ সালে দেশে মাছের মোট উৎপাদন ছিল ২২ লাখ ১৫ হাজার মেট্রিক টন।
‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২২’ উদযাপন উপলক্ষে শনিবার (২৩ জুলাই) মৎস্য ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মন্ত্রী ।
মন্ত্রী জানান, মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশের সাফল্য আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি পেয়েছে। জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ‘দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার-২০২২’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য আহরণে বাংলাদেশ তৃতীয়, বদ্ধ জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে পঞ্চম, ইলিশ উৎপাদনে প্রথম ও তেলাপিয়া উৎপাদনে চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইলিশ মাছ আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য ও গৌরবের প্রতীক। দেশের মোট মাছ উৎপাদনের ১২ দশমিক ২২ ভাগ আসে ইলিশ
থেকে। ইলিশের স্থায়িত্বশীল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে যেখানে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৯৭ হাজার মেট্রিক টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৫ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের আওতায় সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের সর্বোত্তম আহরণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আরভি মীন সন্ধানী নামক মৎস্য গবেষণা ও জরিপ জাহাজের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে এ পর্যন্ত ৩৮টি সার্ভে ক্রুজ পরিচালনা করা হয়েছে। এছাড়াও সমুদ্রে টুনা ও সমজাতীয়
পেলাজিক মৎস্য আহরণের জন্য ‘গভীর সমুদ্রে টুনা ও সমজাতীয় পেলাজিক মৎস্য আহরণে পাইলট প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনার জন্য সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০২০ প্রণয়ন করা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, দেশীয় মাছ সংরক্ষণে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ৩৬ প্রজাতির দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রজনন কৌশল ও চাষ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। প্রথমবারের মতো ময়মনসিংহে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে দেশীয় মাছের লাইভ জিন ব্যাংক। এই জিন ব্যাংকে এখন পর্যন্ত ১০২ প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কোভিড-১৯ এর কারণে বিশ্ববাজারে আর্থিক মন্দাবস্থা থাকা সত্তে¡ও বর্তমান সরকারের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের ফলে সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭৪ হাজার ৪২ দশমিক ৬৭ মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে ৫ হাজার ১৯১ দশমিক ৭৫ কোটি টাকা আয় হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ২৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেশি।