দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য ডিজঅ্যাবল ডিপ্লোমেন্ট (এডিডি)। সংস্থাটি ১৬ বছর ধরে প্রতিবন্ধী শিশুদের আলোর পথ দেখাচ্ছে।
২০০২ সালে কার্যক্রম শুরু করে এডিডি। সে থেকে প্রতিবন্ধী শিশুদের বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে। তাদের সেবাশুশ্রুষায় সুস্থ হয়ে প্রায় সব বিশেষ শিশু বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। প্রতিবন্ধী শিশুদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য সংস্থাটির কেন্দ্রে রয়েছে ছয় সেবিকাসহ ১২ কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাদের মায়া-মমতায় সুস্থ হয়ে উঠছে শিশুরা।
এডিডিতে সন্তানের চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন শাহিনুর রহমান। তিনি বলেন, এখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে আমার ছেলে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে। একই কথা বলেন বারকোনা গ্রামের রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমার মেয়ে অরিন ইসলাম এডিডি থেকে চিকিৎসা নিয়ে এখন বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। নিরলকুড়ি গ্রামের গোলজার হোসেনের ছেলেও এখন স্কুলে যায়। চক্কবীর গ্রামের আলমগীর জানিয়েছেন, তার মেয়ে আফছানা অন্য মেয়েদের সঙ্গে এখন স্কুলে যাতায়াত করতে পারে।
এডিডিতে চিকিৎসা নিতে আসা প্রতিবন্ধী শিশুদের অভিভাবকরা জানায়, এ অঞ্চলে এ শিশুদের কোনো চিকিৎসাকেন্দ্র নেই। বিত্তবান পরিবারের শিশুদের দেশের অন্যস্থানে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু দরিদ্র শিশুরা এ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত ছিল। এডিডি বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়ায় এ অঞ্চলের দরিদ্র পরিবারের প্রতিবন্ধী শিশুরা চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে। তারা এডিডি থেকে চিকিৎসা নিয়ে অনেকে কথা বলা শিখেছে, চলাফেরাও শিখেছে। এখন তারা অন্য শিশুদের সঙ্গে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে।
এডিডির নির্বাহী পরিচালক ডা. মো. আহাদুজ্জামান চৌধুরী সোহাগ প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসার ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তিনি দেখেছেন, এ অঞ্চলের গরিব অসহায় পরিবারের প্রতিবন্ধী শিশুরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত। তাই বঞ্চিতদের সহায়তার জন্য ব্যবসায়ী মাহমুদ আলম লিটনসহ কয়েকজন বিত্তবান ব্যক্তির সহযোগিতায় এ স্বেচ্ছাসবী প্রতিষ্ঠানটি চালু করেন।
ডা. আহাদুজ্জামান বলেন, বর্তমানে ১৯০ প্রতিবন্ধী শিশু এডিডি থেকে বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে। একই সঙ্গে তাদের মা বাবাকেও সচেতন করা হচ্ছে, যেন তারা সঠিক নিয়মে তাদের সন্তানদের যত্ন নিতে পারেন। সুবিধাবঞ্চিত প্রতিবন্ধী শিশুদের পাশে দাঁড়াতে সমাজের বিত্তবান ও সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।