শেয়ার বিজ ডেস্ক: নেপালে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে পরিচয় শনাক্ত হওয়া ১৭ বাংলাদেশির মরদেহ দেশে আনা হতে পারে আজ।
কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ আল আলামুল ইমাম বলেন, বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ উড়োজাহাজে করে বাংলাদেশিদের মরদেহ ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। আর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম শাম্মী বলেন, মরদেহ নিয়ে বিমানবাহিনীর ওই বিশেষ উড়োজাহাজ কুর্মিটোলার বঙ্গবন্ধু বিমানঘাঁটিতে নামবে সোমবার বিকাল ৪টায়।
সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, যাদের শনাক্ত করা গেছে, তাদের লাশ ইউএস-বাংলা নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের একবারে ১৫টির বেশি লাশ বহনের ক্ষমতা নেই। এজন্য তারা সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
১২ মার্চ ওই দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১৭ বাংলাদেশিকে শনাক্ত করার পর শনিবার তাদের তালিকা প্রকাশ করে কাঠমান্ডুর বাংলাদেশ দূতাবাস।
আলামুল ইমাম বলেন, রোববার আরও কয়েকজনের লাশ শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বাংলাদেশি কেউ আছে কিনা সেটা বিকাল পর্যন্ত জানা যায়নি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ‘ফরেনসিক চিকিৎসক অধ্যাপক সোহেল নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাসে কাজ করছেন। তারা ধারণা করছেন, ৯ জনের (এখনও অশনাক্ত) মধ্যে তিন থেকে চারজনকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে ডিএনও টেস্ট ছাড়াই। যে কজনের ডিএনএ টেস্ট লাগবে, তাদের টেস্ট করা হবে। আমাদের দূতাবাস থেকে নেপাল সরকারের জন্য একটি চিঠি তৈরি করা হচ্ছে। এ চিঠি দেওয়ার পর অনুমতি পেলে তাদের ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করা হবে।’
কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত ইউএস-বাংলার ওই উড়োজাহাজের ৭১ আরোহীর মধ্যে ৪৯ জনের মৃত্যু হয় সেদিন। তাদের মধ্যে চার ক্রুসহ ২৬ জন ছিলেন বাংলাদেশি।
যে ১০ বাংলাদেশি প্রাণে বেঁচে গেছেন, তাদের মধ্যে ছয়জনকে ইতোমধ্যে দেশে নিয়ে আসা হয়েছে। দুজনকে পাঠানো হয়েছে সিঙ্গাপুরে। আরও একজন রোববার বিকালে ঢাকায় ফিরছেন।
কাঠমান্ডু মেডিক্যালে চিকিৎসা নেওয়া শাহীন ব্যাপারী রোববার বিকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকা পৌঁছালে বিমানবন্দর থেকে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয়।
আলামুল ইমাম জানান, নেপালের হাসপাতালে এখন আছেন বাংলাদেশের দুজন। তাদের মধ্যে কবির হোসেনকে দেশে পাঠানো হবে সোমবার। আর নরভিক হাসপাতালে থাকা ইয়াকুব আলীকে চিকিৎসার জন্য ভারতের দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে তার পরিবার।
কাঠমান্ডু মেডিক্যালে থাকা ইমরানা কবির হাসিকে শনিবার রাতে একটি ফ্লাইটে কাঠমান্ডু থেকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। সঙ্গে তার বাবা রয়েছেন। এছাড়া রিজওয়ানুল হকও গত বুধবার থেকে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে রয়েছেন।
শনিবার পর্যন্ত দেশে ফেরা পাঁচজন হলেন: শাহরিন আহমেদ, মেহেদী হাসান, সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা, আলমুন্নাহার অ্যানি ও রাশেদ রুবায়েত। বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে তারা ভর্তি আছেন।