ক্রীড়া ডেস্ক: রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট রোববার বিকেল থেকেই রোমাঞ্চ ছড়িয়েছিল। কিন্তু সোমবার লাঞ্চের পর দ্বিতীয় নতুন বল হাতে নিয়েই হাসান আলি ও শহিন আফ্রিদি সেটাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেন। তাদের দাপুটে বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারলেন না দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা। এইডেন মারক্রামের লড়াকু সেঞ্চুরির পরও সহজেই দ্বিতীয় টেস্টে জিতল পাকিস্তান। এরসঙ্গে ১৮ বছর পর প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজ নিজেদের করে নিলো বাবর আজমের দল।
সোমবার ৯৫ রানে রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট জিতেছে পাকিস্তান। স্বাগতিকরা প্রথম টেস্ট জিতেছিল ৭ উইকেটে।
৩৭০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় পঞ্চম দিন ২৭৪ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ১০৮ রান করেন মারক্রাম। প্রথম ইনিংসে ৫৪ রানে ৫ উইকেট নেওয়া হাসান এবার ৫ উইকেট নেন ৬০ রানে। দলে ফেরার সিরিজে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পেলেন ১০ উইকেটের স্বাদ। পাকিস্তানের অষ্টম পেসার হিসেবে একই টেস্টের দুই ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেন তিনি।
আগের দিনের ১ উইকেটে ১২৭ রান নিয়ে সোমবার দিন শুরু করে সফরকারীরা। জয়ের জন্য শেষ দিনে প্রয়োজন ছিল আরও ২৪৩ রান। কিন্তু দিনের তৃতীয় বলে রাসি ফন ডার ডাসেনকে বোল্ড করে ৯৪ রানের জুটি ভাঙেন হাসান। পরে এলবিডব্লিউ করে দ্রুত ফেরান ফাফ দু প্লেসিকে। তবে আগের দিনই ফিফটি পাওয়া মারক্রাম ছিলেন সাবধানী, শুরু থেকে আস্থার সঙ্গে খেলছিলেন টেম্বা বাভুমা। দ্রুতই জমে যায় তাদের জুটি। লাঞ্চের আগেই ২২১ বলে পঞ্চম সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন মারক্রাম। বাভুমা ছিলেন ফিফটির কাছে। ৩ উইকেটে ২১৯ রানের দৃঢ় ভিতে দাঁড়ানো দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের সম্ভাবনা ছিল উজ্জ্বল। তবে লাঞ্চের পর ফিরে নতুন বল হাতে নিয়েই তাদের প্রতিরোধ ভাঙেন হাসান।
সেঞ্চুরিয়ান মারক্রামকে ফেরান তিনি। পরেরকুইন্টন ডি কককে দেন গোল্ডেন ডাকের স্বাদ। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েন মারক্রাম। ড্রাইভ করার চেষ্টায় একই জায়গায় ক্যাচ দেন ডি কক।
মারক্রাম ও বাভুমার ১০৬ রানের জুটি ভাঙার পর আর তেমন কোনো প্রতিরোধ গড়তে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ৬ চারে ৬১ রান করা বাভুমাকে কট বিহাইন্ড করার পর শূন্য রানে কেশভ মহরাজ ও কাগিসো রাবাদাকে বিদায় করেন আফ্রিদি। এর মাঝেই জর্জ লিন্ডেকে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো পাঁচ উইকেট নেন হাসান। এক প্রান্ত আগলে রাখা ভিয়ান মুল্ডারকে বোল্ড করে পাকিস্তানকে দারুণ এক জয় এনে দেন ইয়াসির শাহ।
দুর্দান্ত বোলিং করায় হাসান জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। উইকেটের সামনে-পেছনে দৃঢ়তা দেখানো কিপার-ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ২৭২
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ২০১
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ২৯৮
দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৭০, আগের দিন ১২৭/১) ৯১.৪ ওভারে ২৭৪ (মারক্রাম ১০৮, ফন ডার ডাসেন ৪৮, দু প্লেসি ৫, বাভুমা ৬১, ডি কক ০, মুল্ডার ২০, লিন্ডে ৪, মহারাজ ০, রাবাদা ০, নরকিয়া ২*; আফ্রিদি ২১-৬-৫১-৪, হাসান ১৬-২-৬০-৫, নুমান ২০-৬-৬৩-০, ইয়াসির ২৩.৪-৫-৫৬-১, ফাহিম ১০-২-৩৭-০, ফাওয়াদ ১-০-৫-০)।
ফল: পাকিস্তান ৯৫ রানে জয়ী
সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তান ২-০তে জয়ী
ম্যাচ সেরা: হাসান আলি
সিরিজ সেরা: মোহাম্মদ রিজওয়ান