Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 1:07 pm

১৯৮ কোটি টাকায় নির্মিত হচ্ছে চার লাইটারেজ জেটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের চলমান মেগা প্রকল্পের কাঁচাপণ্য আমদানি ও আগের চেয়ে বিভিন্ন পণ্যের আমদানি বেড়েছে। এতে আমদানিকৃত কাঁচাপণ্যবাহী লাইটারেজ জাহাজের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি আগামী কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চলের বেশ কয়েকটি কারখানা উৎপাদনে আসবে। এতে প্রয়োজন হবে একাধিক লাইটারেজ জেটির। এসব বিবেচনায় আরও চারটি লাইটারেজ জেটি নির্মাণ করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। এতে ব্যয় হবে প্রায় ১৯৮ কোটি টাকা। এসব জেটি নির্মিত হলে বাড়বে বন্দরের কাজের গতি। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের ভোগান্তিও কমবে।

চবক সূত্রে জানা যায়, পতেঙ্গা ইনকন্ট্রেড কনটেইনার ডিপোর পেছনে চারটি লাইটারের জাহাজ জেটি নির্মাণের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে চবক। দুবছরমেয়াদি প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে চবক। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছে ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত।

প্রকল্পের অধীনে প্রতিটি ৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২২ মিটার প্রস্থের চারটি লাইটারেজ জেটি নির্মাণ করা হবে। এছাড়া প্রকল্পের অধীনে ৭২ মিটার কানেক্টিং ব্রিজ (সেতু), ৪৪ হাজার বর্গমিটার আরসিসি ইয়ার্ড/রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণের পাশাপাশি রয়েছে ইয়ার্ড সম্পর্কিত বিবিধ স্থাপনা নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় ড্রেজিং প্রভৃতি। সম্প্রতি চবকের প্রকৌশল বিভাগ থেকে প্রকল্পের ডিপিপি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হলেও সংশোধনের প্রয়োজনে সেটি ফেরত দিয়েছে মন্ত্রণালয়। সংশোধন করে বর্তমানে ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ প্রক্রিয়াধীন।

চবক কর্মকর্তারা আশা করছেন, প্রকল্পটি অনুমোদন দেবে মন্ত্রণালয়। তারা বলছেন, ‘বর্তমানে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার লক্ষ্যে সময়োপযোগী পদক্ষেপগুলোর সুফলের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে পণ্য হ্যান্ডলিং ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্গো ও কনটেইনার হ্যান্ডলিং প্রবৃদ্ধি ১৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তাই ২০২০ সালের মধ্যে চবকের সক্ষমতার ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা লাইটারেজ জাহাজগুলোর পর্যাপ্ত বার্থিং সুবিধা প্রদান করাই প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে একটি বড় জনশক্তি লাইটারেজ জেটিগুলোতে ও ব্যাক-আপ ইয়ার্ডে পণ্য হ্যান্ডলিং, যন্ত্রপাতি পরিচালন ও সংরক্ষণ কাজে নিয়োজিত থাকবে। ফলে বাড়বে নতুন কর্মসংস্থান। আর জেটিগুলোয় সাড়ে চার মিটার ড্রাফটের লাইটার জাহাজ বার্থিং করা যাবে।

এ বিষয়ে চবকের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান সরকার শেয়ার বিজকে বলেন, ‘লাইটারেজ জেটি নির্মাণের লক্ষ্যে ২০১৮ সালের শেষ দিক থেকে আমরা পরিকল্পরা করছি। সার্বিকভাবে চট্টগ্রাম বন্দরের গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লাইটারেজ জেটিগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। এগুলো নির্মিত হলে কনটেইনার জেটিগুলো খালি রাখা সম্ভব হবে এবং জেটিতে ক্রমাগত কনটেইনার জাহাজ বার্থিং দেওয়া সম্ভব হবে। ফলে বহির্নোঙরে জাহাজজট কমবে। এতে জাহাজের অপেক্ষমাণ সময় কমবে এবং চট্টগ্রাম বন্দরের কাজের গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা আরও চারটি লাইটারেজ জেটি পাব। এতে একই সময় চারটি লাইটারেজ জাহাজ বার্থিং দেওয়ার সুযোগ হবে। চার মিটার ড্রাফটের জাহাজ এখানে বার্থিং দেওয়া যাবে। ওখানে আমাদের ১৩ একরের ব্যাক-আপ ইয়ার্ড আছে, যেখানে পণ্যদ্রব্য সংরক্ষণ করা যাবে। এছাড়া প্রকল্পের অধীনে একটি সিএফএস শেড নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের কাজ ডিপিএম, নাকি ওটিএমÑকোন্ পদ্ধতিতে করা হবে, তার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেব আমরা।’