২০১৭-১৮ অর্থবছরে বেড়েছে মূল্যস্ফীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সদ্য সমাপ্ত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আগের অর্থবছরের তুলনায় মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এ সময়ে গড় মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে পাঁচ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে যা ছিল পাঁচ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতির যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল, তার মধ্যে তা ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। অর্থবছরটিতে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ছিল পাঁচ দশমিক পাঁচ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) গতকাল এ হিসাব প্রকাশ করে। গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এই একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে বছর ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি বাড়লেও জুন মাসে আগের মাসের তুলনায় মূল্যস্ফীতি কমেছে বলে বিবিএসের হিসাব থেকে জানা গেছে। মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে জিনিসপত্রের দাম কমার কারণে এবং দেশে বাম্পার ফলন হওয়ায় মূল্যস্ফীতি কমেছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী। মাসওয়ারি ভিত্তিতে জুন মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে পাঁচ দশমিক ৫৪ শতাংশ। গত মে মাসে এ হার ছিল পাঁচ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
জুন মাসে মূল্যস্ফীতি কমার কারণ হিসেবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জিনিসপত্রের দাম ক্রমাগত কমেছে। চিনি, ডাল, তেলের দাম অনেক কমেছে। তাছাড়া এ বছর দেশে বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘চালের দাম একটু বেড়েছে, তবে ওঠানামা করেছে। যদি চালের দাম বাড়ে, সরকার অবশ্যই তা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেবে। গুদামে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত আছে। এই মজুত পরিস্থিতি আগামী দুই বছরের জন্য বেশ ভালো।’
গত অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় মূল্যস্ফীতি বাড়া প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অর্থবছরটিতে হাওরে বন্যা হয়েছিল। লাখ লাখ টন চাল আমদানি করতে হয়েছে। অবশ্য এখন আর চালের সমস্যা নেই।
বিবিএস আরও বলছে, গত মে মাসের তুলনায় মাছ-মাংস, শাকসবজি, মসলা ও ফলজাতীয় পণ্যের দাম বেড়েছে জুনে। অন্যদিকে খাদ্যবহির্ভূত খাতের মধ্যে পরিধেয় বস্ত্র, বাড়ি ভাড়া, বিদ্যুৎ, চিকিৎসাসেবা, পরিবহন, শিক্ষা উপকরণের দাম বেড়েছে।
বিবিএসের প্রকাশিত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, জুন মাসেও গ্রামের চেয়ে শহরের মানুষের ওপর মূল্যস্ফীতির চাপ বেশি ছিল। জুন মাসে শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ছয় দশমিক ৩৯ শতাংশ; গ্রামে ছিল এ হার পাঁচ দশমিক শূন্য সাত শতাংশ।
সংশোধিত এডিপি বাস্তবায়ন ৯৪ শতাংশ: বিদায়ী অর্থবছরে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (আরএডিপি) ৯৩ দশমিক ৭১ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ এক লাখ ৪৭ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। একনেক সভা শেষে গতকাল পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ তথ্য দেন।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয়সহ মূল এডিপির আকার ছিল এক লাখ ৬৪ হাজার পাঁচ কোটি টাকা। পরে তা কমিয়ে এক লাখ ৫৭ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এবার ৯৩ শতাংশের বেশি এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে। সামনে আরও বেশি বাস্তবায়ন হবে। তিনি জানান, গতবারের চেয়ে এবার ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি খরচ হয়েছে। এ প্রবণতা যদি চলতি অর্থবছরে ধরে রাখা যায়, তবে এবার এডিপি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছর এক লাখ ৮১ হাজার কোটি টাকার এডিপি গ্রহণ করা হয়েছে। এডিপিতে এবার এক হাজার ৪৫২টি প্রকল্প রয়েছে। অর্থবছরটিতে ৪৪৬টি প্রকল্প সমাপ্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া এডিপিতে বরাদ্দহীন ও অননুমোদিত প্রকল্প আছে এক হাজার ৩৩৮টি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০