২০১৮-১৯ অর্থবছর : ভ্যাট আহরণে শীর্ষে উত্তর কমিশনারেট, প্রবৃদ্ধিতে যশোর

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদায়ী (২০১৮-১৯) অর্থবছরে কমিশনারেট পর্যায়ে ভ্যাট আহরণের শীর্ষে রয়েছে ভ্যাট উত্তর কমিশনারেট। আর উত্তর কমিশনারেটের আওতাধীন গুলশান বিভাগ সর্বোচ্চ ভ্যাট আহরণ করে। তবে ভ্যাট খাতে সবচেয়ে বেশি আহরণ করে বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)। কিন্তু বিদায়ী অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশ পিছিয়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর আর কাস্টমসের কারণে ভ্যাট আহরণের দিকে এগিয়ে রয়েছে চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেট। আর ভ্যাট আহরণ কম হলেও প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে শীর্ষে ভ্যাট যশোর কমিশনারেট। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বিদায়ী অর্থবছর ভ্যাট খাতে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা এক লাখ চার হাজার ছয় কোটি টাকা। এর মধ্যে এলটিইউ ও ১১টি কমিশনারেট জুন পর্যন্ত ৮৭ হাজার ৬০২ কোটি ৪০ লাখ টাকা আহরণ করেছে; যা গতবছরের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৬ হাজার ৪০৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা কম। ভ্যাট খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৩২ শতাংশ।

এনবিআরের গবেষণা ও পরিসংখ্যান অনুবিভাগের হিসাব অনুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছরে এলটিইউ ৫৭ হাজার ৫০৪ কোটি ৬১ লাখ টাকার সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১১ হাজার ৬১০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা কম আহরণ করেছে। আর আদায়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র দুই দশমিক ৯৯ শতাংশ। এলটিইউ ব্যতীত কমিশনারেট পর্যায়ে সর্বোচ্চ চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটের লক্ষ্যমাত্রা ১১ হাজার ৬০৪ কোটি ১২ লাখ টাকা। এক হাজার ২২১ কোটি ৮০ লাখ টাকা কম আদায় করেও প্রবৃদ্ধি ২১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমসকেন্দ্রিক হওয়ায় এবং অগ্রিম কর আদায়ের ফলে এ কমিশনারেটের আদায় বেশি। অপরদিকে কমিশনারেট পর্যায়ে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সবচেয়ে বেশি আহরণ করেছে ভ্যাট উত্তর কমিশনারেট। প্রতিষ্ঠানটি ৯ হাজার ১৬৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ করেছে আট হাজার ২৭৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। তবে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আহরণ ছিল ছয় হাজার ৭৪২ কোটি ২৩ লাখ টাকা। ভ্যাট আদায়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২ দশমিক ৭৪ শতাংশ। যদিও মাত্র এক হাজার ১৪১ কোটি ৮১ লাখ টাকার ভ্যাট আহরণ আর ২৬ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে রংপুর কমিশনারেট।

সূত্র জানায়, দেশের মোট ৮৭টি বিভাগ রয়েছে। এর মধ্যে যেসব বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে উত্তর কমিশনারেটের আওতাধীন গুলশান বিভাগ। এ বিভাগ বিদায়ী বছর (জুলাই-জুন) সর্বোচ্চ প্রায় চার হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা আহরণ করেছে। যেখানে আয় প্রবৃদ্ধি ২৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আর শুধু জুন মাসে এ বিভাগের আহরণ ৬৮৫ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি ১৪৩ দশমিক এক শতাংশ। গুলশান বিভাগ উত্তর কমিশনারেটের মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৫৭ শতাংশ আহরণ করেছে।

এ বিষয়ে গুলশান বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা ও ডিসি একেএম সুলতান মাহমুদ শেয়ার বিজকে বলেন, ‘কমিশনার মহোদয়ের সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও অতিরিক্ত কমিশনার মহোদয়ের দিকনির্দেশনা এবং এ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরলস পরিশ্রম আর আন্তরিকতার কারণে এ রাজস্ব আহরণ সম্ভব হয়েছে। এছাড়া অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় ও মোটিভেশন করার ফলে তা সম্ভব হয়েছে।’

অপরদিকে ভ্যাট আহরণ কম হলেও প্রবৃদ্ধির দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে ভ্যাট যশোর কমিশনারেট। প্রতিষ্ঠানটি দুই হাজার ১৫৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকার বিপরীতে দুই হাজার ৫০ কোটি ৯১ লাখ টাকা আহরণ করেছে। প্রবৃদ্ধি ২৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। এর পরই দুই হাজার ৪০৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা আহরণ ও ২৬ দশমিক ৬০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে এগিয়ে রয়েছে খুলনা কমিশনারেট। ঢাকা পূর্ব কমিশনারেট আহরণ করেছে দুই হাজার ২৬১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি ২৫ দশমিক ৪২ শতাংশ।

এছাড়া ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেটের আহরণ ছয় হাজার ৭৩৩ কোটি ২০ লাখ টাকা; প্রবৃদ্ধি ২০ দশমিক ৮২ শতাংশ। সিলেট কমিশনারেটের আহরণ এক হাজার ১৮৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা; প্রবৃদ্ধি ২২ দশমিক ৩১ শতাংশ। ভ্যাট পশ্চিম দুই হাজার ৭৮০ কোটি ৯১ লাখ টাকা; প্রবৃদ্ধি ১৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। কুমিল্লা কমিশনারেটের আহরণ দুই হাজার ৯৬৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা; প্রবৃদ্ধি ১৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। রাজশাহী কমিশনারেটের আহরণ এক হাজার ৫২২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা; প্রবৃদ্ধি ১৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০