২০২২ সালে ১০০ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বিশ্ব অর্থনীতি

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ২০২২ সালে বিশ্ব অর্থনীতি ১০০ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এমন পূর্বাভাস দিয়েছে ব্রিটিশ কনসালটেন্সি ফার্ম সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর)। খবর: রয়টার্স।

ফার্মটি আরও জানিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে শীর্ষে থাকবে চীন। অবশ্য গত বছর ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগ টেবল রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ২০২৮ সালের মধ্যে শীর্ষে থাকবে চীন।

গতকাল স্থানীয় সময় কনসালটেন্সি ফার্মটি এক প্রতিবেদনে জানায়, বিশ্ব অর্থনীতি আগামী বছর প্রথমবারের মতো ১০০ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে এবং শীর্ষে থাকবে চীন। তবে শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রকে কাটাতে একটু সময় লাগবে চীনের।

আগামী বছর বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ফ্রান্সকে ছাড়িয়ে যাবে ভারত এবং ব্রিটেনকে ২০২৩ সালে। দেশটি ছয় নম্বর অবস্থান আবার ফিরিয়ে আনবে।

সিইবিআরের ডেপুটি চেয়ারম্যান ডগলাস ম্যাকউইলিয়ামস বলেন, ২০২০-এর দশকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিশ্ব অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব। এ দশকে মুদ্রাস্ফীতির মোকাবিলাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি ছয় দশমিক আট শতাংশে পৌঁছেছে।

তিনি বলেন, নন-ট্রানজেটরি উপাদানগুলোকে নিয়ন্ত্রণে এনে সমন্বয় করতে হবে। অন্যথায় ২০২৩ অথবা ২০২৪ সালে মন্দার জন্য দেশগুলোকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০৩৩ সালে অর্থনৈতিক উৎপাদনের দিক থেকে জাপানকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে রয়েছে জার্মানি। ইন্দোনেশিয়া ২০৩৪ সালে নবম স্থান অর্জনের পথে রয়েছে। রাশিয়া ২০৩৬ সালের মধ্যে শীর্ষ ১০ অর্থনীতির দেশে পরিণত হতে পারে।

ট্রিলিয়ন ডলারের হিসাবে শীর্ষ দশে রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ভারত, ফ্রান্স, ইতালি, কানাডা ও দক্ষিণ কোরিয়া।

এরই মধ্যে ভারত ঘোষণা দিয়েছে, ২০২৪ সালের মধ্যে পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। এজন্য আট শতাংশ হিসেবে তাদের জিডিপিকে বিকশিত করতে হবে। এ কারণে দেশটির অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের দিকে নজর দিতে হবে। এ শিল্প খাতটি তাদের জিডিপিতে প্রায় ৩০ শতাংশ অবদান রাখে। এজন্য দেশটির সরকার এ খাতে নবরূপ দেয়ার চেষ্টা করছে।

ভারতে মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ গ্রামে বাস করে। তাদের বেশিরভাগ কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। তাই চলতি বছর তারা কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে গ্রামীণ এগ্রিকালচারাল মার্কেটস প্রতিষ্ঠা করে দেশটির সরকার। এর সঙ্গে ন্যাশনাল সেন্টার ফর কোল্ড-চেইন ডেভেলপমেন্ট ও নানা বেসরকারি সংস্থাসহ এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড মিনিস্ট্রি অব ফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ যৌথভাবে কাজ করছে।

এদিকে গত বছরও সিইবিআর জানিয়েছিল, এ দশক শেষ হওয়ার আগেই যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠবে চীন। এবার ফার্মটি জানিয়েছে, আগে যে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল, তার আগেই চীন এ লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কনসালটেন্সি ফার্মটি জানিয়েছে, কভিড-১৯ মহামারি ও এর অর্থনৈতিক নেতিবাচক প্রভাব চীনের অনুকূলে কাজ করেছে। মহামারিতে চীন যেভাবে অর্থনীতিকে সামাল দিয়েছে, তাতে দেশটির অর্থনীতিতে দু শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে।

গত বছর সিইবিআর বলেছিল, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি আগামী বছর দৃঢ়ভাবে ঘুরে দাঁড়াবে। তবে চীনের অর্থনীতিতে ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি হবে গড়ে পাঁচ দশমিক সাত শতাংশ করে। এরও আগে ধারণা করা হয়েছিল, অর্থনীতির আকারের দিক থেকে চীন ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাডিয়ে যাবে।

চলতি বছর জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে চীন। আগামী বছরগুলোয়ও এর প্রভাব থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা অর্থনৈতিক পরাশক্তির হওয়ার পাশাপাশি দেশটি সবচেয়ে বেশি কার্বন নির্গমনকারী দেশের দুর্নাম কুড়িয়েছে। তাই কার্বন নির্গমন কমিয়ে আনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেবে চীন। তবে সমস্যা হলো, কার্বন নির্গমন কমানোর

জন্য পদক্ষেপ নিতে গেলে তার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে অর্থনীতির ওপর। আগামী বছরগুলোয় চীন কীভাবে এ পরিস্থিতি সামাল দেবে তা-ই দেখার বিষয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০