২০২৩ সালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রায় তিনগুণ বেড়েছে

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ২০২৩ সালে বাংলাদেশ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রায় তিনগুণ বেড়েছে, যা এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ বিদ্যুতের ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে ও ক্রমবর্ধমান উৎপাদন খরচ কমাতে সাহায্য করেছে। বাংলাদেশের সরকারি তথ্য বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

গতকাল বুধবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি হিসেবে কয়লা প্রাধান্য পেয়েছে। কারণ বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমায় ও দুর্বল মুদ্রার কারণে ব্যয়বহুল প্রাকৃতিক গ্যাস, ফার্নেস অয়েল এবং ডিজেল আমদানিতে হিমশিম খাচ্ছিল সরকার।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) দৈনিক অপারেশনাল রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২২ সালে কয়লা থেকে উৎপাদিত ৭ দশমিক ৯ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুতের তুলনায় ২০২৩ সালে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টায় উন্নীত হয়েছে।

জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন রয়টার্সকে বলেছেন, ‘নতুন ইউনিট চালু হওয়ায় এ বছর কয়লার অংশ আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে গ্যাসের ওপর নির্ভরতা থাকবে এবং তরল জ্বালানির ব্যবহার কমতে পারে।’

পিজিসিবির তথ্য অনুযায়ী, বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি হিসেবে ২০২২ সালে কয়লার অংশ ছিল ৮ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে বেড়ে হয়েছে ১৪ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে প্রাকৃতিক গ্যাসের অংশ ২০২৩ সালে ৫৫ দশমিক ২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা গত চার বছরের মধ্যে প্রথম বেড়েছে এবং ২০২২ সালে ছিল ৫১ শতাংশ।

তবে ২০২৩ সালে প্রাকৃতিক গ্যাসের অংশ গত দশ বছরের গড়ের (প্রায় ৬৬ শতাংশ) তুলনায় বেশ কম ছিল। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশ গ্যাস ব্যবহারে সংকোচন নীতি মেনেছে। এছাড়া দেশের প্রধান গ্যাসের উৎস স্থানীয় গ্যাসের মজুত ও এলএনজি আমদানি কমেছিল।

তথ্যে দেখা গেছে, কয়লা ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহারে জ্বালানি তেল ও ডিজেলের মতো তরল জ্বালানির ব্যয় কমেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ২০২২ সালে এগুলোর অংশ ছিল ২৯ দশমিক ৬ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে ২০ দশমিক ১ শতাংশে নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ ১৭ কোটির বেশি মানুষের বাসস্থান এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ।

পিজিসিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে সামগ্রিক ঘাটতি প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা বা চাহিদার ২ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে, কয়লা-ভিত্তিক উৎপাদন বাড়ানোয় বছরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ঘাটতি কমতে শুরু করে।

এশিয়ার অন্যান্য প্রধান অর্থনীতির দেশ ভারত ও ভিয়েতনামের পাশাপাশি বাংলাদেশও বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় তুলনামূলক সাশ্রয়ী কয়লার ব্যবহার বাড়িয়েছে, যা ২০২৩ সালে ৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বাংলাদেশকে চার বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো গড় উৎপাদন ব্যয় কমানোর পথে নিয়ে গেছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ গড়ে কিলোওয়াট-ঘণ্টা প্রতি ৫ টাকা ২৩ পয়সা (৪ ডলার ৭৮ সেন্ট) হয়েছে, যা ২০২২ সালের তুলনায় প্রায় ৯ শতাংশ কম।

বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল শীর্ষ ১০ অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ এ বছর সৌরশক্তি দ্বিগুণ এবং পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর মাধ্যমে সবুজ জ্বালানি বৃদ্ধির আশা করছে।

শিল্প কর্মকর্তারা বলছেন, তবে জীবাশ্ম জ্বালানি আগামী কয়েক বছর বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর আধিপত্য বজায় রাখবে এবং এই দশকে সামগ্রিক উৎপাদনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অংশ ৫ শতাংশের বেশি হবে না।

দেশকে সংকটে ফেলে, এমন নির্বাচন আমরা চাই না: রাশেদা সুলতানা

নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, তারা এমন কোনো নির্বাচন করতে চান না, যেটা নতুন করে দেশকে একটা সংকটের মধ্যে ফেলবে। তারা মনে করেন, ভালো নির্বাচন করা তাদের নৈতিক দায়িত্ব। গতকাল বুধবার নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা এসব কথা বলেন।

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে রাশেদা সুলতানা বলেন, সে সময় নানা রকম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একটি নির্বাচন হয়েছিল। সে নির্বাচন (সরকার) দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়নি। নির্বাচনটি গ্রহণযোগ্য হয়নি বলে অল্পদিনের মধ্যে আবার নির্বাচন হয়েছে।

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা এ রকম কোনো ইলেকশন করতে চাই না, যেটা নতুন করে দেশকে একটা সংকটের মধ্যে ফেলে। আমরা চাই একটা ইলেকশন হবে, সরকার যে ফর্ম (গঠন) করবে, সেই সরকার স্থায়ী রূপ নেবে। যখনই সরকার অস্থায়ী অবস্থায় চলে যায়, দেশ তখন বিপর্যয়ের মধ্যে চলে যায়। এই সেন্স থেকে হয়তো আমাদের মাথায় এসেছে, আমরা একটা ফেয়ার ইলেকশন করব। আন্তর্জাতিক চাপ আমাদের অন্য কিছু না বা অন্য বিষয়ই না। কোনো দিক থেকে কোনো চাপ না।’

রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘যেখানেই অনিয়ম হবে, সেখানেই নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেবে, প্রয়োজনে সেই কেন্দ্রের ভোট বাতিল করে দেয়া হবে। ভোটের মাঠ এখন ইসির নিয়ন্ত্রণে। ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সুন্দর, সুষ্ঠুভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হবে বলে তারা আশা করছেন।’

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০