শেয়ার বিজ ডেস্ক: এশিয়ার পুঁজিবাজারে ২০২৪ সালের প্রথম কার্যদিবস ছিল গত সোমবার। মূল্যসূচকে পতনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এদিনের লেনদেন। একই দিন যুক্তরাষ্ট্রে ওয়াল স্ট্রিটের বেঞ্চমার্ক সূচকগুলোও ছিল নিম্নমুখী। ২০২৩ সালের শেষ কার্যদিবসের মতো একই ধারায় নতুন বছরের প্রথম দিনের লেনদেনও পতনের ধারায় ছিল। খবর: এপি।
সোমবার দিনের শুরুতে ওয়াল স্ট্রিটের সূচকগুলোয় মিশ্র প্রবণতা দেখা যায়। এদিন তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ১ ডলারের বেশি বৃদ্ধি পায়। তবে নববর্ষ উপলক্ষে বন্ধ ছিল জাপানের পুঁজিবাজার।
এদিন হংকংয়ের প্রধান মূল্যসূচক হ্যাং সেং ১ দশমিক ৫ শতাংশ কমে। এতে তাদের পয়েন্ট দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৮০০ দশমিক ৭৩-এর স্তরে। সাংহাই কম্পোজিট সূচক শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে ২ হাজার ৯৬৮ দশমিক ৮১ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ঋণে জর্জর চীনা আবাসন প্রতিষ্ঠান এভারগ্রান্ডের সূচক কমে ৬ শতাংশ। এছাড়া লংফর গ্রুপ হোল্ডিংয়ের শেয়ারদর কমে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। গত বছর থেকে এভারগ্রান্ডের কারণে বিশ্ববাজারে বিশেষ করে এশিয়ার পুঁজিবাজার টালমাটাল। চীনের এই প্রতিষ্ঠানটি যে নিজ দেশ থেকেই ঋণ গ্রহণ করেছে, তা নয়। বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে অর্থ তুলেছে এভারগ্রান্ডে। এ কারণে গত সেপ্টেম্বরে বিশ্বজুড়ে পুঁজিবাজারে ধস নামে।
চীনের দ্বিতীয় বৃহত্তম নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এভারগ্রান্ডে। বিশ্ববাজারে তাদের ঋণের পরিমাণ ৩০ হাজার কোটি ডলার। স্বাস্থ্য, গাড়ি, গণমাধ্যম, আর্থিক সংস্থা, ইঞ্জিনিয়ারিং প্রভৃতি খাতে ব্যবসা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। দেনার ফলে নির্মাণ ব্যবসা বন্ধ হলে বাকিগুলোয়ও এর প্রভাব পড়তে পারে। চীনে বর্তমানে ১ হাজার ৩০০টি নির্মাণ প্রকল্প চলছে এভারগ্রান্ডের। মোট কর্মী ২ লাখের বেশি। এছাড়া প্রায় ৩৮ লাখ অস্থায়ী কর্মী রয়েছে। ফলে এমন বৃহৎ একটি প্রতিষ্ঠান লোকসানে থাকলে তার প্রভাব যে সমগ্র বিশ্ব বাজারে পড়বে, তা বলাই বাহুল্য।
গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স বা পিএমআই অনুযায়ী, চীনের সূচক ৫০-এর নিচে নেমে আসে, যার মান ছিল ৪৯। এ নিয়ে টানা তিন মাস ৫০-এর নিচে থাকল সূচক। এর অর্থ, বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল এবং আরও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে।
বেইজিংভিত্তিক চীনা ব্যবসায়িক গণমাধ্যম কাইক্সিন সম্প্রতি বেসরকারি খাত নিয়ে একটি জরিপ করেছে। এতে দেখা গেছে, নতুন উৎপাদন এবং ক্রয়াদেশের কারণে উৎপাদন খাতে পিএমআই হয়েছে ৫০ দশমিক ৮। তবে ২০২৪ সালে ব্যবসায়িক আস্থা নড়বড়ে বলে তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ান কোসপি সূচক শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে ২ হাজার ৬৫১ দশমিক ৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ভারতে সেনসেক্সের সূচক কমে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ।
সোমবার কয়েকটি বাজারে মূল্যসূচকে উত্থান হয়েছে। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার এসঅ্যান্ডপি/এএসএক্স ২০০ সূচক বৃদ্ধি পায় শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। এতে তাদের পয়েন্ট হয়েছে ৭ হাজার ৬২৫ দশমিক ৬০। এছাড়া ব্যাংককের সেট সূচক বৃদ্ধি পায় শূন্য দশমিক ২ শতাংশ।
ওদিকে গত শুক্রবার ওয়াল স্ট্রিটে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক কমে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। তবে বেঞ্চমার্ক সূচকটি এখনও টানা ৯ মাস ঊর্র্ধ্বমুখী ধারায় রয়েছে। তবে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল এসঅ্যান্ডপি ৫০০। বর্তমানে তার চেয়ে মাত্র শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ নিচে অবস্থান করছে সূচকটি।
এছাড়া ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ সূচক কমে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ। নাসডাক কমে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ।
২০২৩ সালে ওয়াল স্ট্রিটে সূচকের বৃদ্ধিতে অবদান রাখে সাতটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার। এগুলো হচ্ছেÑঅ্যাপল, মাইক্রোসফট, অ্যালফাবেট, আমাজন, এনভিডিয়া, মেটা প্লাটফর্মস ও টেসলা।