নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, ২০২৫ সালের মধ্যে প্রায় ৫২ হাজার হেক্টর ম্যানগ্রোভ বাগান গড়ে তোলা হবে এবং এক লাখ ৪০ হাজার হেক্টর পাহাড়ি ও শাল বনাঞ্চল পুনর্বনায়ন করা হবে। তিনি বলেন, ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩১ হাজার হেক্টর ব্লক প্ল্যান্টেশন এবং প্রায় ২৪ হাজার হেক্টর ম্যানগ্রোভ প্ল্যান্টেশন করা হয়েছিল। ২০৩০ সালের মধ্যে বনাঞ্চলের লক্ষ্য ১৬ শতাংশ অর্জন করতে বনায়ন, পুনর্বনায়ন, পুনরুদ্ধার এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সহযোগিতার মাধ্যমে দরিদ্র এবং বননির্ভর লোকদের জড়িত বন ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্ন্যান্স ইনোভেশন ইউনিটের উদ্যোগে আয়োজিত বিগত ছয় বছরে এসডিজি বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা-বিষয়ক দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলনের সমান্তরাল অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সরকার বাস্তুতন্ত্র, জীববৈচিত্র্য, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ভূমিক্ষয়-সংক্রান্ত বৈশ্বিক চাপের পরিবেশগত সমস্যা মোকাবিলার জন্য সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম এবং নীতিগত বিষয় বাস্তবায়ন করেছে। তিনি বলেন, আমরা দূষণ কমাতে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছি। তাছাড়া দেশের মধ্যে বায়ুদূষণ কমাতে ৬৪টি জেলায় ৪ দশমিক ২ মিলিয়ন উন্নত রান্নার চুলা স্থাপন করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা ২০২৫ সালের মধ্যে সব সরকারি নির্মাণে ব্লক ইট ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করেছি। শিল্প পানি দূষণ রোধ করার জন্য বর্তমানে শিল্পগুলোর বর্জ্য শোধনাগার কাভারেজ ৮২ দশমিক ৯ শতাংশ। আমাদের মাটি থেকে বিপজ্জনক রাসায়নিক অপসারণের জোরালো উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ডিডিটি মজুত ২০২২ সালের শেষ নাগাদ পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, পুরোনো ট্রান্সফরমার থেকে পলিক্লোরিনযুক্ত বাইফেনাইলগুলো ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে বের করা হবে।
বনমন্ত্রী বলেন, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ২০২০ সালে তিনটি ডলফিন অভয়ারণ্য এবং একটি বন্যপ্রাণী অভয়াারণ্য ঘোষণা করা হয়েছে এবং ২০২১ সালে একটি জাতীয় উদ্যান এবং একটি সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ভূমি সংরক্ষণের জন্য আমরা ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ইকো-রিস্টোরেশন, বৃহত্তর রংপুর জেলায় সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন, খরাপ্রবণ বরেন্দ্রভূমি এবং হাওর জলাভূমি এলাকায় বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। আলোচক ছিলেন ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তফা কে. মুজেরি।
পরিকল্পনা বিভাগের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মিজানুল হক চৌধুরী, যুগ্ম সচিব জাকিয়া আফরোজ প্রমুখ।