২০২৭ সালের মধ্যে ৭৫ শতাংশ ক্যাশলেস লেনদেন: গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুরোপুরি না হলেও আগামী চার বছরের মধ্যে ৭৫ শতাংশ লেনদেন ক্যাশলেস করার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি বলেন, মানুষের হাতে নগদ অর্থ যত কম থাকবে, অর্থনৈতিক কার্যক্রম তত বাড়তে থাকবে।

গতকাল রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম সম্মলেন কক্ষে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) সঙ্গে এক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন গভর্নর।

বিডার সঙ্গে চারটি প্রতিষ্ঠানের সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছে। এর মধ্যে ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন পিএলসি ও  মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিডার ওয়ান স্টপের মাধ্যমে ১৫০টি সেবা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি ৬৭টি সেবা দিচ্ছে, স্বল্প সময়ের মধ্যে নতুন করে আরও ১২টি সেবা যুক্ত করা হবে।

বিডার সঙ্গে সমঝোতার স্মারক অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক আটটি সেবা দেবে। এর মধ্যে অনলাইন ওয়ান স্টপ সেবার মাধ্যমে অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় মেয়াদি ঋণ গ্রহণ, পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির দেশ থেকে বিদেশে আবার বিদেশ থেকে দেশে এবং বিদেশ থেকে বিদেশের অনুকূলে শেয়ার হস্তান্তর করা, বিদেশ থেকে কোনো কোম্পানির প্রফিট দেশে ফিরিয়ে আনা, পরামর্শক ফি বিদেশে পাঠানো, পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত নয় এমন প্রতিষ্ঠান বিদেশি মালিকের শেয়ার দেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির অর্থ বিদেশে নিতে পারা, বাংলাদেশে বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের অর্থ পুনরায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে পরিষদের সুযোগ এবং বাংলাদেশের বিদেশি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে অবশিষ্ট অর্থ বিদেশে পাঠানোর সুযোগ পাবে।

এছাড়া অগ্রণী ও মিচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক এ সেবার মাধ্যমে গ্রাহকরা অনলাইনে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে। কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সাময়িক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও অনলাইন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে।

গভর্নর বলেন, আমাদের বিনিয়োগ যত বাড়বে তত কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। আমাদের প্রতি বছরের নতুন করে প্রায় ২ বিলিয়নের মতো কর্মবাজারে প্রবেশ করছে। এর মধ্যে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ হাজার সরকারি চাকরিতে যোগ দিচ্ছে। চার থেকে পাঁচ লাখ লোক বিদেশে যায়। বাকিদের কর্মসংস্থান দেশের মাটিতেই করতে হবে, তাই বিনিয়োগের কোনো বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে অনেক মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকবল তৈরি হচ্ছে। অর্থনৈতিক কার্যক্রম যত বৃদ্ধি পাবে, এর বৃদ্ধি আরও টেকসই হবে।

আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, দেশে প্রায় দুই কোটির বেশি লোক প্রতি বছরে ১২ হাজার ডলারের বেশি আয় করে। দেশের যে প্রবৃদ্ধি এটা ডমেস্টিক মার্কেট থেকে বেশি আসে। তাই ডমেস্টিক মার্কেটে বিনিয়োগের বড় ধরনের সুযোগ রয়েছে।

গভর্নর বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক সেবা অটোমেশন নয়, রিয়েল টাইমে নিয়ে এসেছি। বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অন্য ব্যাংকগুলোর ফ্রি ফাইন্যান্স ও রি-ফাইন্যান্সের ফান্ড বিতরণ আরটিজিএসের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়। এছাড়া কোর বিজনেসগুলো অনেক আগ থেকেই অনলাইনের মাধ্যমে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিস পোর্টালের মাধ্যমে আটটি সেবা দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। যত দ্রুত সম্ভব আগামী এক মাসের মাধ্যমে সার্ভিসগুলো এর মাধ্যমে দেয়ার চেষ্টা করব।

কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগের কোনো বিকল্প নেই। এজন্য বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিডার প্রতি আহ্বান জানান গভর্নর। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে অংশ নেয়া ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা বক্তব্য দেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি অনলাইন ওয়ান স্টপ সার্ভিস সিস্টেম সেবা চালু করে বিডা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০