নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকারের ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার খায়েশ জেগেছে। সেই নীলনকশা নিয়েই তারা ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো একই কায়দায় ২০২৩ সালের নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু মানুষ এবার তা হতে দেবে না। উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি করে জনগণ এদের পরাজিত করবে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনে অংশ নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
বর্তমান সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে গতকাল বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারাদেশে সব জেলা ও মহানগরে একযোগে মানববন্ধন করে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন দল ও জোট। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে টঙ্গীর আবদুল্লাহপুর ব্রিজ পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার সড়কে এ মানববন্ধন হয়।
নয়াপল্টনে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ও উত্তর বাড্ডার সুবাস্তু নজরভ্যালি মার্কেটের সামনে মানববন্ধনে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রধান অতিথি ছিলেন।
ফখরুল বলেন, আজকে এ সরকার পরিকল্পিতভাবে এ দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। সংবিধান ধ্বংস করে দিয়েছে। ১৯৭২ সালে যে সংবিধান হয়েছিল, পরবর্তীকালে সংবিধানে জনগণের প্রয়োজনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ব্যবস্থা যুক্ত করা হয়েছিল, তাকে ভেঙেচুরে তারা এখন একদলীয় শাসনব্যবস্থা করার লক্ষ্যে দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে।
বিগত দুটি জাতীয় নির্বাচনের উদাহরণ টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৪ সালে নির্বাচনে কোনো ভোটার বা মানুষের অংশগ্রহণ ছিল না। ২০১৮ সালে নির্বাচন করেছে আগের রাতে। এখন আবার খায়েশ হয়েছে যে তারা ২০৪১ সাল পর্যন্ত থাকবে। সেই ব্লুপ্রিন্ট (নীলনকশা) নিয়ে তারা আবার ২০২৩ সালের নির্বাচন করতে চায় একই কায়দায়। কেন? কারণ তাদের তো আজীবন ক্ষমতায় থাকতে হবে। এই দেশ তো তাদের জমিদারি, আমরা সব প্রজা। সেই প্রজার মতোই ব্যবহার তারা আমাদের সঙ্গে শুরু করেছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকে কথায় হবে না। এই আন্দোলনে মানুষকে আরও সম্পৃক্ত করতে হবে। জনগণের উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি করে এদের পরাজিত করতে হবে। আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন যে, এখন কথা বলতে শুরু করেছেন এই অবৈধ সরকারের দু-তিন মন্ত্রী, যারা কথায় কথায় বিভিন্ন কথা বলেন। এখন বলতে শুরু করেছেন, বিএনপি ভয় পায়, বিএনপি নির্বাচন করবে। পরিষ্কার ভাষায় বলে দিতে চাই, বিএনপি এ সরকারের অধীন, হাসিনা সরকারের অধীন, এই নির্বাচন কমিশনের অধীন কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না।’
ফখরুল বলেন, ‘আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। এই আন্দোলনে আমরা ১০ দফা দিয়েছি। এই ১০ দফার মধ্যে আমরা পরিষ্কার বলেছি, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে একটা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন করতে হবে।’
এদিকে পঞ্চগড়ে আহমদিয়া জামাতের বার্ষিক জলসায় হামলার ঘটনার জন্য সরকারকে দায়ী করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের সামনে আর কোনো বিকল্প পথ নেই। অনেক দুষ্টামি করছে। অনেক রকমের চক্রান্ত শুরু করেছে আবার। পঞ্চগড়ে সাম্প্রদায়িক ঘটনা সৃষ্ট করার জন্য তারা (সরকার) অনুমতি দিয়েছে, তারা নীরব ভূমিকা পালন করেছে। আবার সেই ঘটনার পর বিএনপির ১৮১ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে দেশের মানুষকে বোকা বানানো যাবে না। গায়েবি মামলা দিয়ে ঠিকে থাকা যাবে না।’