Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 6:53 pm

২০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে টিকা নিল সাড়ে পাঁচশ শিক্ষার্থী

কাইমুল ইসলাম ছোটন, কক্সবাজার: ডিজিটাল আইল্যান্ড খ্যাত মহেশখালীর মধ্যে অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত একটি ইউনিয়ন হলো ধলঘাটা। স্থানীয় নাগরিকরা দীর্ঘ সময় ধরে নানান প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে জীবনযাপন করতেছে। এ দ্বীপে সরকারের সর্ববৃহৎ প্রকল্প কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও গভীর সমুদ্র বন্দরের কাজ চলছে। কিন্তু ভাগ্য ফিরেনি স্থানীয় বাসিন্দাদের।

চলমান মহেশখালী উপজেলায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা প্রদান কর্মসূচির আওতায় ধলঘাটা ইউনিয়নের একটি উচ্চ বিদ্যালয়, একটি দাখিল ও একটি আলিম মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা টিকার আওতায় এসেছে।

রোবরার (৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে মাতারবাড়ির সিএনজি স্টেশনের রশিদ মার্কেটে তাদের টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। করোনার ভ্যাকসিন নিতে দশ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে টিকা কেন্দ্রে গিয়ে আবারো দশ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরেছে ধলঘাটার শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে।

মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা গেছে, ধলঘাটা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩৪৭ জন শিক্ষার্থী, ধলঘাটা বদরুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার ১৪০ জন শিক্ষার্থী এবং মহুরীঘোনা মোহাম্মদিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার ২৪৭ জন শিক্ষার্থী, মোট ৭৩৪ জন শিক্ষর্থীকে টিকার আওতায় এনে প্রায় সাড়ে ৫’শ শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে বাকি ২’শ শিক্ষার্থীকে টিকা প্রদান করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ধলঘাটা থেকে মাতারবাড়িতে টিকা নিতে আসা খুবই কষ্টকর। ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের প্রায় ২০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। ধলঘাটার দুরত্ব ও যাতায়াতের সীমাবদ্ধতা বিবেচনা করে এখানে টিকা কেন্দ্র স্থাপন জরুরি ছিল।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকতা ডাক্তার মাহফুজুল হক শেয়ার বিজকে বলেন, ‘টিকা গুলো এসি গাড়িতে পরিবহন করে এসি রুম সংরক্ষণে রাখতে হয়। এসি গাড়ি ও রুমের অভাবে ধলঘাটায় কেন্দ্র করা যায়নি।’

এদিকে অভিভাবকদের দাবি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হলে ধলঘাটার পাশে প্রকল্পের এসি রুমে টিকা কেন্দ্র স্থাপন করা যেত। কেননা, প্রকল্পের শ্রমিকদের সেখানে টিকা দেয়া হয়েছে। আর শিক্ষার্থীদের দেয়া হয়েছে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। এটি চরম বৈষম্যের বহিঃপ্রকাশ বলে দাবি করেন তারা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও সমালোচনার ঝড় ওঠছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ধলঘাটার ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম শেয়ার বিজকে বলেন, ‘টিকা পরিবহন ও সংরক্ষণে এসি গাড়ি ও কক্ষ লাগে। যা ধলঘাটায় নেই। আর রাস্তাঘাট গাড়ি চলার উপযোগী নয় বিধায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। যারা টিকা নেয়নি তাদের কালারমারছড়া থেকে টিকা নিতে হবে। তাদের যাতায়াতের জন্য বোটের ব্যবস্থা করেছি।’