Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 8:08 pm

২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ মার্চের মধ্যে বইমেলা শুরু হতে পারে

নিজস্ব প্রতিবেদক: মহামারির কারণে পিছিয়ে যাওয়া চলতি বছরের অমর একুশে গ্রন্থমেলা ভার্চুয়ালি নয়, সরাসরিই হবে; তবে সেই তারিখ এখনও চ‚ড়ান্ত হয়নি। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি, ৭ মার্চ অথবা ১৭ মার্চ থেকে বইমেলা শুরু করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি প্রস্তাব পাঠানো হবে বলে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ জানিয়েছেন।

গতকাল গ্রন্থমেলার আয়োজক বাংলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, কভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে বা টিকা দেয়া শুরু হলে আমরা কীভাবে দ্রুত সময়ে বইমেলা শুরু করতে পারি, সেই প্রস্তুতি নেয়ার জন্য আমাদের আজকের এই বৈঠক ছিল। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বইমেলা সরাসরি হবে, ভার্চুয়াল বইমেলা নয়। তবে সময়টা আমরা এখনও নির্ধারণ করতে পারিনি।

কেএম খালিদ বলেন, পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকেই বইমেলা শুরু করার ভাবনা তাদের ছিল, কিন্তু বাস্তবতা বিবেচনায় তা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি ওপেন প্রস্তাব পাঠাব; ২০ ফেব্রুয়ারি, ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ থেকে বইমেলা শুরু করা যায় কি না। কেননা ১২ এপ্রিল থেকে রোজা শুরু হয়ে যাবে। রোজার আগেই আমরা বইমেলা শেষ করতে চাই।”

২০ ফেব্রুয়ারি থেকে বইমেলা শুরু করা সম্ভব কি না এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কভিড নিয়ন্ত্রণে এলে বা ভ্যাকসিন চলে এলে ওই সময়ে বইমেলা শুরু করা সম্ভব। যদিও একটু কঠিন হবে। কভিড নিয়ন্ত্রণে না এলে মেলা নিয়ে অনিশ্চয়তাও রয়েছে। এখনও অনিশ্চয়তার মধ্যেই আছি আমরা। তবে কভিড খানিকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আমরা আশাবাদী, শিগগিরই এটা আরও নিয়ন্ত্রণে আসবে। তখন আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে বইমেলার আয়োজনের চেষ্টা করব।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রকাশকরা মার্চের মধ্যেই বইমেলা সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন, তা না হলে বৈরী আবহাওয়া এবং রোজা শুরু হয়ে যাওয়ার বিষয় থাকে।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, সম্ভাব্য তিনটি তারিখের সঙ্গে আমরা একমত। এখন ২০ ফেব্রুয়ারি শুরু করা যায় কি না, সেটা নির্ভর করে প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার বা সম্মতির ওপরে।

বইমেলার সঙ্গে বাংলা একাডেমি, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও প্রকাশকরা জড়িত থাকলেও এ বছর অন্য মন্ত্রণালয়গুলোও বিশেষভাবে যুক্ত হয়ে আছে। প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিলে আমরা বিশেষ ব্যবস্থাপনায় চেষ্টা করব একুশের চেতনাকে ধরে ২০ ফেব্রুয়ারিতে মেলাটা শুরু করার। এটি আমাদের জন্য কষ্টকর হলেও সার্বিক বিবেচনায় আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। সবকিছুই নির্ভর করবে পারস্পরিক সমঝোতার ওপরে।

বৈঠক শেষে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, আমরা এর আগেও কয়েক দফা মিটিং করে বলেছি, যেহেতু এবার বিশেষ পরিস্থিতি, প্রয়োজনে বইমেলা মার্চ পর্যন্ত যেতে পারে। তবে মার্চের মধ্যেই বইমেলা শেষ করতে হবে এবং বইমেলা হতে হবে ফিজিক্যাল বইমেলা।

প্রতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি এ মেলার পর্দা উঠলেও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে ভোট থাকায় গত বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলা একদিন পিছিয়ে ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়। ততদিনে চীন ছাড়িয়ে করোনাভাইরাস অন্যান্য দেশে পৌঁছাতে শুরু করলেও বাংলাদেশে এর প্রকোপ দেখা দেয়নি। ফলে ফেব্রুয়ারির শেষে নির্বিঘ্নে মেলার সমাপ্তি ঘটে।