২১ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: ঈশ্বরদীর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান তিয়ানে আউটডোর বিডি কোম্পানি লিমিটেড বন্ড সুবিধার আওতায় পাবনার চট্টগ্রাম বন্দরে সুতা ঘোষণা দিয়ে চীন থেকে এনেছিল এক কনটেইনার বিদেশি সিগারেট। তবে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চালানটি আমদানি করলেও চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তাদের তৎপরতায় শেষ রক্ষা হয়নি প্রতিষ্ঠানটির। গতকাল চালানটি জব্দ করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।

সূত্র জানায়, চীনের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ডিসিপ্রা প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এমভি এক্সপ্রেস কোহিমা জাহাজে করে পণ্যগুলো চট্টগ্রাম বন্দরে আনা হয়। তারপর চালানটি খালাসের জন্য চলতি মাসের ২২ তারিখে আমদানিকারকের পক্ষে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে চট্টগ্রামের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ক্রোনী শিপিং করপোরেশন। কিন্তু আমদানিকারক পণ্য চালানে ৬৮০ কার্টনে ১৫ হাজার কেজি সুতা (৮৫ শতাংশ কটোন ইয়ান) আমদানির ঘোষণা দিলেও পুরো কনটেইনারে বিদেশি সিগারেট পাওয়া যায়। আমদানিকারক বিল অব এন্ট্রিতে চালানটির আমদানি মূল্য দেখিয়েছে ১৬ হাজার ৩২০ মার্কিন ডলার, অর্থাৎ ৮৫ দশমিক ৯৩১ টাকা বিনিময় হারে বাংলাদেশি টাকায় ১৫ লাখ ১১ হাজার ২৬৩ টাকা। যদিও এ চালানের প্রকৃত মূল্য অনেক বেশি, যা খালাসের জন্য আমদানিকারক গত ২৬ তারিখে চার লাখ ৬৮ হাজার ৪৯১ টাকা শুল্কও পরিশোধ করেছে। চালানটি আমদানির জন্য সাউথ ইস্ট ব্যাংক থেকে এলসি করা হয়েছিল।

অপরদিকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) টিম ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় রপ্তানিকারক, তৈরি দেশ, আমদানিকারকের ব্যবসায়ের ধরন ও ঠিকানা, পণ্যের বর্ণনা প্রভৃতি বিশ্লেষণ করে পণ্য চালানটিতে অসত্য ঘোষণা পণ্য আমদানির বিষয়ে প্রাথমিক ধরণা লাভ করে। পরে পণ্য চালানটির খালাস কার্যক্রম স্থগিত করে এআইআর কর্তৃপক্ষ।

তারপর গতকাল পণ্য চালানটি শতভাগ কায়িক পরীক্ষার জন্য কনটেইনার খোলে এআইআরটিম। তাতে দেখা যায়, সব কার্টন সিগারেটে ভর্তি এবং তাতে এক কোটি ৬৮ লাখ ৩০ হাজার শলাকা সিগারেট পাওয়া যায়। এসব সিগারেটের মধ্যে এক কোটি ২৯ লাখ ৪০ হাজার শলাকা ওরিস সিলভার ব্র্যান্ড, ১৮ লাখ ৮০ হাজার শলাকা ওরিস গোল্ড ব্র্যান্ড, ১০ লাখ শলাকা ইজি গোল্ড ব্র্যান্ড, আড়াই লাখ শলাকা ডানহিল ব্র্যান্ড, দুই লাখ ৪০ হাজার ডানহিল সুইস ব্র্যান্ড, এক লাখ শলাকা ওরিস ডাবল আপেল ব্র্যান্ড, এক লাখ শলাকা ওরিস স্টবেরি, দুই লাখ ৬০ হাজার বেনসন অ্যান্ড হেজেস ও ৬০ হাজার শলাকা মন্ড ব্র্যান্ডের সিগারেট পাওয়া যায়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য তিন কোটি ৬২ লাখ টাকা। আর এই চালানের বিপরীতে রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হয় প্রায় ২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার ফখরুল আলম বলেন, চালানটি শর্তসাপক্ষে আমদানিযোগ্য, কিন্তু আমদানিকারক মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য চালানটি আমদানি করেছে, যাতে বিপুল রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এ চালানে অর্থ পাচারও হয়ে থাকতে পারে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি প্রদানের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০