নিজস্ব প্রতিবেদক: মহামারির কারণে এবার চার মাস পিছিয়ে ১৯ জুন থেকে এসএসসি ও ২২ আগস্ট থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এসএসসিতে তিনটি ও এইচএসসিতে একটি বিষয়ে পরীক্ষা না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গতকাল ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে এই পরিকল্পনার কথা জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হবে পুনর্বিন্যস্ত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী।
এসএসসিতে ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং বিজ্ঞান এই তিন বিষয়ের পরীক্ষা নেয়া হবে না। এ বিষয়গুলোর নম্বর সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে। আর এইচএসসিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষা না নিয়ে তা সবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে নম্বর দেয়া হবে।
বাংলা, ইংরেজি, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, উচ্চতর গণিত, জীববিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবসায় উদ্যোগ, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা, ভূগোল ও পরিবেশ, পৌরনীতি ও নাগরিকতা, অর্থনীতি, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান এবং কৃষি শিক্ষাÑএই বিষয়গুলোয় এবার এসএসসি পরীক্ষা হবে। এইচএসসি পরীক্ষা হবে বাংলা, ইংরেজি ও গ্রুপভিত্তিক নৈর্বাচনিক তিনটি বিষয় এবং একটি ঐচ্ছিক বিষয়ে পুনর্বিন্যস্ত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী। এসএসসি ও এইচএসসিতে দুই ঘণ্টার পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের জন্য ২০ মিনিট এবং রচনামূলক প্রশ্নের জন্য এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট সময় থাকবে।
বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম পত্র ও দ্বিতীয় পত্রÑএ বিষয়গুলোয় ৫০
নম্বরের পরীক্ষা হবে। অন্য বিষয়গুলোর মধ্যে যেসব বিষয়ে ব্যবহারিক রয়েছে, সেগুলোয় ৪৫ নম্বরের (রচনামূলক ৩০ ও নৈর্ব্যক্তিক ১৫ নম্বর) এবং ব্যবহারিক না থাকলে ৫৫ নম্বরের (রচনামূলক ৪০ ও নৈর্ব্যক্তিক ১৫) পরীক্ষা দিতে হবে শিক্ষার্থীদের।
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ শুরু করার জন্য ১৩ এপ্রিল এবং এইচএসসিতে ৮ জুন সম্ভাব্য তারিখের কথা জানিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।
পরীক্ষার্থীদের এবার নির্বাচনী পরীক্ষাও দিতে হবে না। এর পরিবর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা নিতে পারবে। এসএসসির প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা শুরু হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ ১৯ মে এবং এইচএসসিতে ১৪ জুলাই।
সাধারণত ফেব্রুয়ারিতে মাধ্যমিক ও এপ্রিলে উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা হয়ে এলেও মহামারি সেই সূচি পাল্টে দিয়েছে।
২০২০ সালে কভিডের সংক্রমণ শুরুর আগে এসএসসির পরীক্ষা নিতে পেরেছিল সরকার। পরে সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সে বছর আর এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া যায়নি। তার বদলে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন ফল দেয়া হয়।
দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ২০২১ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষাও পিছিয়ে যায়। ৯ মাস পিছিয়ে নভেম্বরে এসএসসি ও আট মাস পিছিয়ে ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে ঘাটতি থাকায় গত বছর সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা নেয়া হয় তিন বিষয়ে। আর এইচএসসি পরীক্ষা হয় তিন বিষয়ের ছয়টি পত্রে।