নিজস্ব প্রতিবেদক: কারেন্সি সোয়াপের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে বাড়তি ডলার তুলে নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কারেন্সি সোয়াপের মাধ্যমে পাওয়া ডলারও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে যোগ হচ্ছে। তবু রিজার্ভের পতন থামছে না। চলতি মাসের ২২ দিনে রিজার্ভ কমেছে দেড় বিলিয়ন ডলারের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এখনও ডলারের বাজার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। চাহিদা অনুযায়ী জোগান কম রয়েছে। তাই ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করছে। আবার এ মাসে বড় আমদানি পেমেন্ট ছিল, যার কারণে কারেন্সি সোয়াপের মাধ্যমে ডলার যোগ হলেও পেমেন্ট দেয়ার কারণে রিজার্ভ না বেড়ে বরং কমেছে। এছাড়া কারেন্সি সোয়াপ করা হয় স্বল্পমেয়াদি। তাই নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে তা ব্যাংক ফেরত নিয়ে যায়। এখন কিছু ব্যাংক ফেরত নেয়া শুরু করছে। এর প্রভাবে রিজার্ভ কমছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৬ মার্চ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৬৩৪ কোটি ডলার। গত ২৭ মার্চ এ রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৪৮১ কোটি ডলারে। বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ নেমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৪৫ কোটি ডলারে, যা ৬ মার্চ ছিল ২ হাজার ১১৫ কোটি ডলারে। অর্থাৎ ২১ দিনে গ্রোস রিজার্ভ কমেছে ১৫২ কোটি ডলার (১ দশমিক ৫২ বিলিয়ন) এবং বিপিএম-৬ কমেছে ১৬৯ কোটি ডলার (১ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন)।
রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি: বাজারে ডলার সংকট কাটাতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ থেকে ধারাবাহিক ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সময়ে বাণিজ্যিক কিছু ব্যাংক থেকে এক বিলিয়ন ডলারের মতো কেনে বাংলাদেশ ব্যাংক, যার পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলারের মতো। এর আগে গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল। আর আগের অর্থবছরে (২০২১-২২) বিক্রি করেছিল ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।
বৈদেশিক মুদ্রার অদল-বদল: ডলার সংকট কাটাতে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কারেন্সি সোয়াপ বা মুদ্রার অদল-বদল কার্যক্রম চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আওতায় প্রায় ১৭৫ কোটি (১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন) ডলার রেখে প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকার বেশি তারল্য সহায়তা নিয়েছে সংকটে থাকা কয়েকটি ব্যাংক। জমা রাখা ডলার বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভে যোগ হচ্ছে। এর মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়াতে চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে চলতি মাসে আকুসহ অন্যান্য আমদানি বিল পরিশোধের চাপে রিজার্ভ ধারাবাহিক কমছে।