নিজস্ব প্রতিবেদক: মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত এক দিনে আরও ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও দুই হাজার ১৯৮ জন। গতকাল সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত দুই হাজার ১৯৮ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা চার লাখ ৭৯ হাজার ৭৪৩ জন হলো। আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ৩৬ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ছয় হাজার ৮৭৪ জনে দাঁড়াল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুই হাজার ৬৬৩ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে তিন লাখ ৯৮ হাজার ৬২৩ জন হয়েছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ, তা সাড়ে চার লাখ পেরিয়ে যায় ২৪ নভেম্বর। এর মধ্যে গত ২ জুলাই চার হাজার ১৯ জন কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৬ নভেম্বর তা সাড়ে ছয় হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ২৬তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩২তম অবস্থানে। বিশ্বে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ছয় কোটি ৭১ লাখ পেরিয়েছে; মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১৫ লাখ ৩৬ হাজার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১২টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ১৫টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ১০টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে অর্থাৎ সর্বমোট ১৩৭টি ল্যাবে ১৪ হাজার ৩৬৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ২৮ লাখ ৭৭ হাজার ৫৩৮টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৩০ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৩ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৩ শতাংশ।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৩ লাখ তিন হাজার ৭০টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে পাঁচ লাখ ৭৪ হাজার ৪৬৮টি।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ২৪ জন পুরুষ আর নারী ১২ জন। তাদের মধ্যে ৩২ জন হাসপাতালে ও চারজন বাড়িতে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ২১ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, তিনজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, দুজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল। মৃতদের মধ্যে ২৫ জন ঢাকা বিভাগের, সাতজন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং একজন করে মোট চারজন রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ছয় হাজার ৮৭৪ জনের মধ্যে পাঁচ হাজার ২৫৫ জনই পুরুষ এবং এক হাজার ৬১৯ জন নারী। তাদের মধ্যে তিন হাজার ৬৮১ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও এক হাজা ৭৭৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৮২৩ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩৫২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৫৪ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৫৫ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৩ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
এর মধ্যে তিন হাজার ৭২০ জন ঢাকা বিভাগের, এক হাজার ২৮২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪১৪ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫০৩ জন খুলনা বিভাগের, ২২৭ জন বরিশাল বিভাগের, ২৭০ জন সিলেট বিভাগের, ৩১১ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৪৭ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।