নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে কভিড-১৯ প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার ২৮ মাস পর মোট শনাক্ত কভিড রোগীর সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়িয়ে গেল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৮৮৪ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে; তাতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২০ লাখ ২৭৯ জন।
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে গত এক দিনে। তাদের নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট ২৯ হাজার ২৫৬ জনের মৃত্যু হলো।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে ২০২০ সালের ৮ মার্চ; তা এক লাখ ছাড়ায় সে বছরের ১৮ জুন। প্রথম রোগী শনাক্তের ১৬ মাস পর ২০২১ সালের ৯ জুলাই ১০ লাখ ছাড়িয়ে যায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা। তার এক বছরের মাথায় সেই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় কভিড থেকে সেরে উঠেছেন ১ হাজার ৬০২ জন। তাদের নিয়ে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা বেড়ে হলো ১৯ লাখ ৩১ হাজার ৪৯৪। গত এক দিনে ৯ হাজার ১০ জনের নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার কমে হয়েছে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। আগের দিন এই হার ১২ দশমিক ২০ শতাংশ ছিল। মহামারির মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ, আর মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
নতুন শনাক্ত ১ হাজার ১০৪ জনের মধ্যে ৩৯৩ জন ঢাকা জেলার বাসিন্দা। দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৫৮ জেলাতেই গত এক দিনে নতুন রোগী ধরা পড়েছে। গত এক দিনে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। এছাড়া বরিশাল বিভাগের দুজন এবং খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন ১ জন করে। মৃত ৬ জনের মধ্যে চারজন পুরুষ, দুজন নারী। তাদের মধ্যে পাঁচজন সরকারি হাসপাতালে এবং একজন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা সামলে বাংলাদেশে দৈনিক শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমে এসেছিল পরের বছর মে মাসের মাঝামাঝি। কিন্তু করোনাভাইরাসের নতুন ভেরিয়েন্ট ডেল্টার সামাজিক বিস্তার বা কমিউনিটি ট্রান্সমিশন ঘটায় ২০২১ সালের জুনের শুরু থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংক্রমণ ও মৃত্যু আবার বাড়তে শুরু করে। ওই বছর ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হন।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ডেল্টা ভেরিয়েন্টের দাপটের মধ্যে ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারির মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা। এরপর গত বছরের শেষ দিকে সংক্রমণ ও মৃত্যু যখন আবার কমে এলো, তখন বিশ্বে দ্রুত ছড়াতে শুরু করল আরেকটি নতুন ধরন ওমিক্রন। সেই ধাক্কায় এ বছর ২৫ জানুয়ারি দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আবার ১৬ হাজার পেরিয়ে যায়। তবে ফেব্রুয়ারি থেকেই সংক্রমণ আবার কমতে থাকে। আর মৃত্যুর সংখ্যাও ডেল্টার সময়ের মতো অতটা ব্যাপক হয়নি সে সময়। এর পেছনে টিকার বড় ভূমিকা রেখেছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।