শেয়ার বিজ ডেস্ক: চলতি বছরের নভেম্বরে জাপানের বেকারত্ব কমে দুই দশমিক সাত শতাংশে পৌঁছেছে। ১৯৯৩ সালের নভেম্বরের পর এটিই দেশটিতে সর্বনিম্ন বেকারত্বের হার। গত কয়েক বছর ধরে মূল্যস্ফীতি ও আর্থিক বাজারে অস্থিতিশীলতার মধ্যে থাকা জাপানের অর্থনীতি ঘুড়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর এএফপি।
জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত মাসে কর্মসংস্থান ও চাকরিপ্রত্যাশীর অনুপাত ছিল এক দশমিক ৫৬। আগের মাসের তুলনায় এটি দশমিক শূন্য এক বেশি। আর ৪৪ বজরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল এ অনুপাত।
হিসাবমতে, জাপানে ছয় কোটি ৪৮ লাখ ৩০ হাজার কর্মজীবী রয়েছেন। তবে এ আগের মাসের তুলনায় দশমিক তিন শতাংশ কম।
এদিকে চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় জাপানের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বেড়েছে এক দশমিক চার শতাংশ। এ নিয়ে টানা সাত প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি বাড়ল দেশটির। এটিই গত এক দশকের মধ্যে জাপানের প্রবৃদ্ধি দীর্ঘ সময় ধরে বৃদ্ধির ঘটনা। ব্যক্তিগত খরচ বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়া এ প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এ দেশটির স্মার্টফোন যন্ত্রাংশ ও মেমোরি চিপসহ বিভিন্ন পণ্যের রফতানি বৃদ্ধি এবং ২০২০ সালে অলিম্পিককে কেন্দ্র করে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে গত মাসের প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
২০১৩ সালে ‘আবেনোমিকস’ তত্ত্বের ওপর ভর করে ক্ষমতায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। নানা সময়ে দেশে আবেতত্ত্ব নিয়ে সমালোচনা হলেও আবে তাতে পাত্তা দেননি। বারবার অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ার পরও শিনজো আবের দাবি, তারা শিগগিরই দেশের অর্থনীতিকে সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যাবেন।
বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, কাঠামোগত সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী আবের যোগ্যতায় যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। আবে ২০১৩ সালের গ্রীষ্মে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের একটি উচ্চাভিলাষী কৌশল ঘোষণা করেন, যা দ্রুততার নামানুসারে ‘অ্যাবেনোমিকস’ হিসেবে পরিচিতি পায়। ‘অ্যাবেনোমিকস’ অনুযায়ী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে শত শত কোটি ডলার ব্যয় করা হয়েছে। এর ফলে অর্থনীতিতে দুটি প্রতিক্রিয়া হয়েছে। প্রথমত, নিজস্ব মুদ্রা ইয়েনের দাম কমানো হয়েছে। এতে রফতানি পণ্যের দামও সস্তা হয়ে যায়। দ্বিতীয়ত, বিনিয়োগকারীরা ব্যাপক হারে বন্ড মার্কেট ছেড়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে। এতে শেয়ারের দাম বেড়ে যায়। তাতে অল্পসংখ্যক ধনী লোকই লাভবান হয়েছেন। কারণ জাপানের ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ শেয়ারবাজারে জড়িত হন না।