আজিমপুর মাতৃসদনে দুর্নীতির অভিযোগ

২৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের চার মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: কেনাকাটায় দুর্নীতির প্রমাণ পেয়ে আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের ২৫ জনের বিরুদ্ধে চার মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সংস্থাটির ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাগুলো করেছেন উপপরিচালক আবুবকর সিদ্দিক। পরে অভিযুক্তদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

বাজারদরের চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ বেশি দামে ওষুধ, সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি ও প্যাথলজি সামগ্রী কেনাকাটায় প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়। দুদক সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।

যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তারা হলেন: আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক ইসরাত জাহান, পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সাবেক অধ্যক্ষ ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য পারভীন হক চৌধুরী, মাতৃসদনের সাবেক সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য মাহফুজা খাতুন, সাবেক সহকারী কো-অর্ডিনেটর (ট্রেনিং অ?্যান্ড রিসার্চ) ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য চিš§য় কান্তি দাস, সাবেক মেডিকেল অফিসার ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম, মেডিকেল অফিসার (শিশু) ও বাজারদর যাচাই কমিটির সদস্য মাহফুজা দিলারা আকতার।

মাতৃসদনের মেডিকেল অফিসার ও বাজারদর যাচাই কমিটি সদস্য নাজরিনা বেগম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সদস্য সচিব (বাজারদর যাচাই কমিটি) জহিরুল ইসলাম, পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য জেবুন্নেসা হোসেন, সিনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনি) ও বাজারদর যাচাই কমিটির সভাপতি রওশন হোসনে জাহান, মাতৃসদনের সাবেক সহকারী কো-অর্ডিনেটর (ট্রেনিং অ?্যান্ড রিসার্চ) ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. লুৎফুল কবীর খান, মেডিকেল অফিসার ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য রওশন জাহান, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক হালিমা খাতুন, মাতৃসদনের বিভাগীয় প্রধান (শিশু) ও বাজারদর যাচাই কমিটির সদস্য মো. আমির হোছাইন, সাবেক সমাজসেবা কর্মকর্তা ও বাজারদর যাচাই কমিটির সদস্য মোছা. রইছা খাতুন ও সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী গোলাম আহসান, সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (শিশু) নাদিরা আফরোজ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. নাছের উদ্দিন, সমাজসেবা কর্মকর্তা বিলকিস আক্তার, মেডিকেল অফিসার আলেয়া ফেরদৌসীকেও আসামি করা হয়েছে।

ঠিকাদারদের মধ্যে মনার্ক এস্টাব্লিশমেন্টের মালিক মো. ফাতে নূর ইসলাম, মেসার্স নাফিসা বিজনেস কর্নারের মালিক শেখ ইদ্রিস উদ্দিন (চঞ্চল), সান্ত¡না ট্রেডার্সের মালিক নিজামুর রহমান চৌধুরী আসামি হয়েছেন।

গতকাল দুদক থেকে পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক বরাবর চিঠি পাঠিয়ে ওই ২৫ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দুদক।

দুদকের সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, ২০১৪-১৫ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত চার অর্থবছরের কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করা হয়। দুদকের অনুসন্ধান বলছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কার্যাদেশ অনুযায়ী ঠিকাদারকে ওষুধ সরবরাহের বিপরীতে ৩২ লাখ ৯১ হাজার ৭২০ টাকার বিল পরিশোধ করা হয়। অথচ খুচরা মূল্য ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মূল্য অনুযায়ী ওই একই ওষুধের সর্বোচ্চ মূল্য ১৬ লাখ ৪৫ হাজার ২৯৮ টাকা। বাকি টাকা অতিরিক্ত দেওয়া হয়েছে। এভাবে চার অর্থবছরে একই প্রক্রিয়ায় প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। দুদক বলছে, এক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দায় ও ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০