নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রায় ২৬ মাস পর দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-র প্রধান সূচক সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে দিনশেষে পাঁচ হাজার ১৮২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিকে সূচকের এই ধারাবাহিক উত্থানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই। তাদের অভিমত, পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে। ফলে এখানে বাড়ছে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ, যার প্রভাব পড়েছে সূচকে। এর আগে ২০১৪ সালের ১০ অক্টোবর সূচকের অবস্থান ছিল পাঁচ হাজার ২৮২ পয়েন্টে।
গতকালের বাজারচিত্র লক্ষ করলে দেখা যায়, লেনদেনের শুরু থেকেই ডিএসইর সবগুলো সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল। সকালে লেনদেনের শুরুর কিছুক্ষণ পরই সূচক পাঁচ হাজার ১৭১ পয়েন্টে চলে যায়। এ সময় অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বাড়তে থাকে, যে কারণে বেড়ে যায় বিক্রির চাপও। ফলে কিছু সময়ের জন্য সূচক নি¤œমুখী থাকে। পরবর্তীতে পাঁচ হাজার ১৯১ পয়েন্টে চলে যায়। যদিও এটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। কারণ লেনদেন শুরুর প্রথম দুই ঘণ্টা পর আবারও বাজারে কিছুটা সেল প্রেশার বেড়ে যায়। এ কারণে সকালের তুলনায় শেয়ারদরও কিছুটা কমতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে সূচক। দিনশেষে যা স্থির হয় পাঁচ হাজার ১৮২ পয়েন্টে। ২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি নতুন সূচক চালু হওয়ার পর এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে। প্রসঙ্গত ডিএসইর নতুন সূচকের ভিত্তি ধরা হয়েছিল চার হাজার ৫৫ দশমিক ৯১ পয়েন্ট।
এদিকে গতকাল প্রধান সূচকের পাশাপাশি বাড়ে অন্য দুটি সূচক। দিনশেষে ডিএসইর শরিয়া সূচক তিন পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ২২২ পয়েন্টে। অন্যদিকে ডিএস-৩০ সূচক বাড়ে আট পয়েন্ট। দিনশেষে যা স্থির হয় এক হাজার ৮৬৪ পয়েন্টে। এদিকে গতকাল উল্লেখযোগ্য সূচক বৃদ্ধির দিন ডিএসইতে সন্তোষজনক লেনদেন হয়। যার পরিমাণ ছিল এক হাজার ২৪৫ কোটি টাকা।
বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য চাইলে ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর বাজার স্থিতিশীল পর্যায়ে রয়েছে। ফলে সবার এ বাজারের প্রতি আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। বাজারে যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এ বাজারে দেখেশুনে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারীদের লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তাদের বিনিয়োগের মানসিকতা রাখতে হবে। ডে ট্রেডার হলে চলবে না।’
একই বিষয়ে আলাপ করলে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘সার্বিক পুঁজিবাজার এখন স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে। ফলে এর প্রভাব পড়ছে লেনদেন ও সূচকে। তবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের যে আকার, তাতে সূচক পাঁচ হাজার পয়েন্টে যাওয়া স্বাভাবিক। বাজার পরিস্থিতি ভালো থাকলে সূচক আরও বাড়লেও কোনো ক্ষতি নেই’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
Add Comment