নিজস্ব প্রতিবেদক: খেলা শুরুর একটু আগে থেকেই আকাশে কালো মেঘের আনাগোনা। প্রথম সেশনেই জ্বলে উঠল ফ্লাডলাইট। রোদ-মেঘের সেই লুকোচুরি চলল দিনজুড়েই। বাংলাদেশের পারফরম্যান্সেও তেমনই আলো-আঁধারের খেলা। দুই সেশনের চিত্র দুই রকম। শেষ সেশনে খেলাই হলো না আলোকস্বল্পতায়। মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনে পাকিস্তানের রান ২ উইকেটে ১৬১। মেঘলা দিনে আলোকস্বল্পতায় খেলা শেষ হয় ৩৩ ওভার আগেই।
সিরিজে সমতা আনার ম্যাচে টসে হারে বাংলাদেশ। টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তান দলের অধিনায়ক বাবর আজম।
দিনের প্রথম সেশনের দুই দলের জন্য ছিল দুই রকম। পাকিস্তানের ভালো শুরুর পর দারুণভাবে তাইজুলের কল্যাণে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। তবে বাবর আজম ও আজহার আলির দৃঢ়তায় দ্বিতীয় সেশনে পড়েনি একটি উইকেটও। দিনশেষেও তাই এগিয়ে পাকিস্তানই।
সফরের তিন টি-টোয়েন্টি ও প্রথম টেস্টে ব্যর্থতার পর অবশেষে রানের দেখা পেলেন বাবর আজম। পাকিস্তান অধিনায়ক অপরাজিত ৬০ রানে। আজহারের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে তার অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ৯১।
এ জুটির আগ পর্যন্ত ম্যাচে দারুণ লড়াই করে বাংলাদেশ। সেটি মূলত তাইজুল ইসলামের সৌজন্যে। প্রথম সেশনে দুর্দান্ত বোলিং করেন আগের টেস্টে ইনিংসে ৭ উইকেট পাওয়া বাঁহাতি স্পিনার। ম্যাচের প্রথম সকালেই উইকেট থেকে আদায় করে নেন টার্ন ও বাউন্স। খুব বড় হুমকি হয়ে উঠতে না পারলেও নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ধরে রাখেন চাপ। প্রথম ১৫ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে পাকিস্তান তোলে ৫৪ রান। পরের ১৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে রান ২৩ নিতে পারে। সেই ঘুরে দাঁড়ানোর মূল কৃতিত্ব তাইজুলের।
তবে বাবর ও আজহার পরে সরিয়ে দেন চাপ। পাকিস্তানের শুরুটাও ছিল ভালো। যদিও টস জিতে যখন তারা ব্যাটিংয়ে নামে, ভালো শুরুর সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনেও।
আবু জায়েদ চৌধুরীর জায়গায় সুযোগ পেয়ে ২১ মাস পর টেস্ট খেলতে নামা খালেদ প্রভাব রাখতে পারেননি একটুও। আগের টেস্টে ভালো করলেও ইবাদত হোসেন চৌধুরী ধরে রাখতে পারেননি ধারাবাহিকতা। দুজনের অনিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাকিস্তানি ওপেনাররা বরং থিতু হয়ে যান অনায়াসেই।
আগের টেস্টে ১৩৩ ও ৯১ রানের দুটি ইনিংস খেলা আবিদকে এবার ৩৯ রানে থামাতে পেরে দারুণ স্বস্তিই পাওয়ার কথা বাংলাদেশের।
প্রথম সেশনে উইকেট নেয়ার সম্ভাবনা আরও কয়েক দফায় জাগায় বাংলাদেশ। সেই পালায় দুটি রিভিউও হারাতে হয়। তবে উইকেট আর পড়েনি।
সেই ধারা চলতে থাকে পরের সেশনেও। খালেদ আর বোলিং পাননি। ইবাদত লাঞ্চের পরও ভালো করতে পারেননি। তাইজুল-সাকিব চেষ্টা করে যান, কিন্তু বাবর-আজহারের জুটিতে ফাটল ধরাতে পারেননি। পরে মেহেদী হাসান মিরাজ আক্রমণে এসেও খুব একটা ভোগাতে পারেননি দুই ব্যাটসম্যানকে।
বলার মতো একটা সুযোগই বাংলাদেশ পেয়েছিল। সাকিবের বলে উড়িয়ে মারেন বাবর, লং অফে অনেকটা দৌড়েও কঠিন ক্যাচটি নিতে পারেননি সৈয়দ খালেদ আহমেদ। বাবর ১৯তম টেস্ট ফিফটি পেরিয়ে অপরাজিত থাকেন। একপ্রান্ত আগলে রেখে আজহার ১১২ বলে অপরাজিত থাকেন ৩৬ বলে। সেক্ষেত্রে দুই সেশন মিলে প্রথম দিন শেষে পাকিস্তানি এগিয়ে আছে।
আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্ট আট উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৫৭ ওভারে ১৬১/২ (আবিদ ৩৯, শফিক ২৫, আজহার ৩৮*, বাবর ৬০*; ইবাদত ৯-১-২৮-০, খালেদ ৪-১-১৯-০, সাকিব ১৫-৬-৩৩-০, তাইজুল ১৭-৫-৪৯-২, মিরাজ ১২-২-৩১-০)।