Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 9:13 pm

৩৫তম ও ৩৬তম বিসিএস: কোটার শূন্যপদে নিয়োগ পাবেন মেধাবীরা

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা ও প্রাধিকার কোটায় সংরক্ষিত শূন্যপদ পূরণে এককালীন তা শিথিল করেছে সরকার। এসব কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে জাতীয় মেধাতালিকার শীর্ষে অবস্থানকারী সাধারণ প্রার্থী দ্বারা অপূরণ পদগুলো পূরণ করা হবে।

গতকাল সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠকে ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় বিভিন্ন ক্যাডারে মুক্তিযোদ্ধা, মহিলা ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কোটায় অপূরণকৃত সংরক্ষিত পদ ৩৬তম বিসিএসের সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের শূন্যপদের সঙ্গে যুক্ত করে সেগুলো পূরণ করা এবং এ লক্ষ্যে প্রাধিকার কোটায় অপূরণকৃত পদ সংরক্ষণের বিধান ৩৬তম বিসিএসের জন্য এককালীন শিথিলের পৃথক একটি প্রস্তাবও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, ‘সিদ্ধান্ত আছে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে পদ খালি রাখতে হবে। পিএসসি বলেছে, ৩৬তম বিসিএসের দুই হাজার ১৮০টি শূন্যপদের মধ্যে কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারের জন্য এক হাজার ৬৩৮টি পদ আছে। সেক্ষেত্রে এ পদগুলোর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধাদের কোটার ৪৯১টি, ১০ শতাংশ মহিলা কোটার ১৬৪টি, পাঁচ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটার ৮২টি পদসহ ৭৩৭টি পদের অধিকাংশই খালি থাকবে। পদগুলো পূরণ সম্ভব হবে না। এ প্রেক্ষিতে ওই শূন্যপদগুলো মেধাতালিকার শীর্ষে অবস্থান করা প্রার্থীদের মাধ্যমে পূরণের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।’

৩৫তম বিসিএস পরীক্ষার শূন্যপদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় কৃতকার্য কিন্তু ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত নন এমন প্রার্থীদের নন-ক্যাডার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদ পূরণের ক্ষেত্রে দেখা গেল মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ সংক্রান্ত শর্ত শিথিল না করলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্কেল অ্যাডজুটেন্টের ৩০২টি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মিডওয়াইফারির ৬০০টি পদ পূরণ করা যাচ্ছে না। এজন্য মন্ত্রিসভা একবারের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ শর্ত শিথিলের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ পদগুলোতে মুক্তিযোদ্ধা প্রার্থী না পাওয়ায় ৩৫তম বিসিএসে উত্তীর্ণদের মেধাতালিকা থেকে পূরণ করা হবে। ৩৫তম বিসিএসের কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারের অপূরণকৃত ৩৩৮টি পদ ৩৬তম বিসিএসের দুই হাজার ১৮০টি পদের সঙ্গে যোগ করে তা ৩৬তম বিসিএসের মেধাতালিকা থেকে পূরণ করা হবে। প্রাধিকার কোটার অপূরণকৃত পদ সংরক্ষণের বিধান শুধু ৩৬তম বিসিএসের জন্যই শিথিল করা হয়েছে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এছাড়া বৈঠকে ‘বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (সংশোধন) আইন ২০১৭’-এর খসড়া, ‘বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আইন ২০১৭’-এর খসড়া, ‘প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৬’-এর খসড়া ও ‘শিশু (সংশোধন) আইন ২০১৭’-এর খসড়ার নীতিগত  অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৬: বিষ প্রয়োগে কোনো প্রাণী হত্যা বা বিকলাঙ্গ করলে দুবছর কারাদণ্ড বা ২০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রেখে ‘প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৭’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, নতুন আইনে বলা হয়েছেÑআইনানুগ কর্তৃত্ব বা যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কোনো ব্যক্তি যদি বিষাক্ত বা অনিষ্টকর ওষুধ বা খাদ্য কোনো গৃহপালিত, পোষা বা আবদ্ধ প্রাণীকে খাওয়ান বা প্রয়োগ করেন এবং এ কারণে প্রাণীটির মৃত্যু হয়, বিকলাঙ্গ বা কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়, তাহলে তিনি অপরাধী হবেন। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি দুবছর কারাদণ্ড বা ২০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কোনো প্রাণীর প্রতি অকারণে নিষ্ঠুর ও নির্দয় আচরণ করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।

এছাড়া নতুন আইনে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পোষা প্রাণী লালন-পালন করা যাবে। তবে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দফতরের ছাড়পত্র লাগবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, প্রাণী কল্যাণ আইন লঙ্ঘনের দায়ে যে কারও বিরুদ্ধে পুলিশের এসআই’র নিচে নন এবং প্রাণীসম্পদ অধিদফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলা করতে পারবেন।