হামিদুর রহমান: মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর সারাদেশে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা ফোরজির সাইট প্রায় ৫০ হাজার ১০০টি। ফোরজি সাইট সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে গ্রামীণফোন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রবি আজিয়াটা। আর সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে রাষ্ট্রীয় অপারেটর টেলিটক।
মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর প্রাপ্ত তথ্যমতে, বেশের শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের সারাদেশে ফোরজি সাইট রয়েছে প্রায় ১৮ হাজার ৭০০টি, রবি আজিয়াটার ফোরজি সাইট রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার ১০০টি, বাংলালিংকের সাইট রয়েছে প্রায় ১১ হাজার ৮০০টি আর রাষ্ট্রীয় অপারেটর টেলিটকের ফোরজি সাইট রয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৫০০টি।
তবে ফোরজি সাইট বাড়লেও সেবার মান বাড়ছে না বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, দেশে ফোরজিতে ডাউনলোড ও আপলোডে যে স্পিড থাকার কথা বেশিরভাগ সময়ে গ্রাহকরা তা পাচ্ছেন না। গ্রাহকরা রাস্তায় গাড়িতে যাওয়ার সময় নেটওয়ার্ক পড়ে যাচ্ছে, ব্রাফারিং হচ্ছে। অন্যদিকে সব এলাকায় এখনও ত্রুটিপূর্ণ সেবা থাকায় গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়ছেন।
মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো জানায়, দীর্ঘ সময় টাওয়ার শেয়ারিংয়ের কাজ করতে না পাড়ায় নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে সময় লেগে যায়। অপারেটরগুলো এখন দ্রুত সেবার পরিধি বাড়াতে কাজ করছে। অনেক সময় হাইরেজুলেশনের ভিডিও দেখার সময় কিছুটা সেøা হয়। তবে ব্যবহারকারী কীভাবে কোন লোকেশনে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন, সেটিও একটি বিষয়। কেননা অনেক সময় একই এলাকায় বহু ব্যবহারকারী একই সঙ্গে ব্যবহার করলে, তখন ক্যাপাসিটির তুলনায় বেশি প্রেসার পড়লেও স্পিড কমে যেতে পারে।
এদিকে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ শেয়ার বিজকে বলেন, বর্তমান সময়ে গ্রাহকদের ডিমান্ড বাড়লেও অপারেটরগুলোর সেবার পরিধি বা মান বাড়েনি। সর্বশেষ অপারেটরগুলো তরঙ্গ বরাদ্দ নিলেও তা ডেভেলপমেন্টের জন্য কাজ করেনি। সাইট বাড়লেও কোয়ালিটি নেই। অন্যদিকে বিটিআরসিও গ্রাহকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ জবাবদিহি নেই। নেটওয়ার্ক সমস্যায় পড়ে অনেক করপোরেট অফিসে আজকাল নেটওয়ার্ক সংযোগ স্থাপন করার জন্য বোস্টার লাগানো হচ্ছে। আইনগতভাবে এসব বোস্টার লাগানো অবৈধ।
এদিকে ফোরজি চালু হলেও সেবার মানে রাষ্ট্রীয় অপারেটর টেলিটক তলানিতে রয়েছে অভিযোগ করেছেন গ্রাহক ও সংশ্লিষ্টরা। গ্রাহকরা জানান, দেশে ডিজিটাল প্ল্যাটফম বাড়ায় তাদের প্রধান বিবেচনায় রয়েছে মূল্য সাশ্রয়ী। দামের দিকে টেলিটক সাশ্রয়ী হলেও সেবার মান খারাপ হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে টেলিটক গ্রাহকদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. সোহানুর রহমান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, বিভিন্ন চাকরির আবেদন করতে একটি টেলিটক সিম ব্যবহার করছি। তবে ইন্টারনেট ব্যবহারে বাসার ওয়াইফাইয়ের বিকল্প হিসেবে টেলিটক ব্যবহার করলেও অভিজ্ঞতা খুব বাজে। ভিডিও কিংবা আপলোড-ডাউনলোডে স্পিড একেবারেই থাকে না। ফোরজির যুগে এমন ধীরগতির সেবা ভোগান্তির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ২৭ টাকায় এক জিবি ইন্টারনেট মেয়াদ সাত দিন থাকায় গত সপ্তাহে এ প্যাকেজটি ক্রয় করি। তবে স্পিড না থাকায় আর ব্যবহার করা হচ্ছে না।
সম্প্রতি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন তুহিন পাটোয়ারী। তিনি জানান, ই-কমার্স ব্যবসায় সার্বক্ষণিক অনলাইনে যুক্ত থেকে গ্রাহকদের আপডেট জানাতে হয়। বর্তমানে বিদ্যুৎ সংকটে দেশব্যাপী লোডশেডিং বাড়ায় সাশ্রয়ী রেটের কথা চিন্তুা করে মুঠোফোনে টেলিটকে ফোরজির ইন্টারনেট প্যাকেজ ব্যবহার করছি। তবে টেলিটকের ফোরজির সেবা মান খুবই বাজে। প্রচুর ব্রাফারিং করে। আর কোনো কিছু আপলোড করতেও অনেক বেশি সময় নেয়।
