Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 4:04 pm

৪৯৩ কোটি টাকা লেনদেনে চাহিদার শীর্ষে পাট-কাগজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগের সপ্তাহের বৃহস্পতিবার দেশের পুঁজিবাজারে পতন শুরু হয়। টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনের পর গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে নামমাত্র উত্থানের মাধ্যমে সেই পতনের অবসান ঘটে। তবে শেষ দিন প্রধান সূচক বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের পুঁজিবাজারের সব সূচক কমেছে। একই সঙ্গে লেনদেনও আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে এবং লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত ছিল।

এদিকে গত সপ্তাহে সূচক ও লেনদেন কমলেও বিনিয়োগকারীদের চাহিদা বেশি ছিল পাট এবং কাগজ ও মুদ্রণ খাতের শেয়ারে। ফলে গত সপ্তাহে পাট খাতের শেয়ারের দর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে

এবং দ্বিতীয় বেড়েছে কাগজ খাতের শেয়ার। অন্যদিকে খাত দুটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ বা ৪৯৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে শেয়ারদর বৃদ্ধিতে শীর্ষ অবস্থানে থাকা পাট খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১ শতাংশ বা ৫৮ কোটি ১ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। কিন্তু খাতটিতে শেয়ারদর বেড়েছে ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। এ খাতে গত সপ্তাহে মোট ৩টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১টি কোম্পানির শেয়ারের এবং বাকি দুটির শেয়ারদর কমেছে। গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ বা ৪৩৫ কোটি ৯ লাখ টাকা লেনদেন হওয়া কাগজ খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ। খাতটিতে গত সপ্তাহে মোট ৬টি কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে এবং ৩টির শেয়ারদর কমেছে।

এছাড়া গত সপ্তাহে বাকি সব খাতের শেয়ারদর কমেছে। ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে গত সপ্তাহে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। এ খাতে গত সপ্তাহে ১১ দশমিক ৭০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। ভ্রমণ খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ২০ শতাংশ বা ১৮৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহে এ খাতে মোট ৩টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে এবং ১টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়নি। ডিএসইর মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ বা ৪২৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা লেনদেন হওয়া সেবা এবং আবাসন খাতে গত সপ্তাহে শেয়ারদর কমেছে ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। এ খাতে গত সপ্তাহে মোট ৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৪টি কোম্পানির শেয়ারেই দর কমেছে। এদিকে গত সপ্তাহে টেলিকমিউনিকেশন ও মিউচুয়াল ফান্ড খাতের শেয়ারদর কমা ও বৃদ্ধি সমান থাকায় কোনো পরিবর্তন হয়নি।

অন্যদিকে গত সপ্তাহে সবচেয়ে লেনদেন বেশি হয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। এ খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৮ দশমিক ৮০ শতাংশ বা ১ হাজার ৯০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। খাতটি গত সপ্তাহে লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকলেও এর শেয়ারদর কমেছে ১ শতাংশ। এছাড়া লেনদেনের দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা প্রকৌশল খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ বা

৯০৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪ দশমিক ৩০ শতাংশ বা ৮২৯ কোটি ৫৭ টাকা লেনদেন হয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিবিধ খাত।

গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৫ হাজার ৮০১ কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার ৪৬৫ টাকার

লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৪ হাজার ৮৩২ কোটি ৯২ লাখ ২৫ হাজার

৪২৯ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেনে ৯৬৮ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৩৬ টাকা বেড়েছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১০১ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৯২ দশমিক ৩০ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১২ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৩০ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৪০৭ দশমিক ০৩ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ২৭৭ দশমিক ৬৫ পয়েন্টে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৮৬টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৪১টির বা ১০ দশমিক ৬২ শতাংশের, কমেছে ১৭১টির বা ৪৪ দশমিক ৩০ শতাংশের ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭৪টির বা ৪৫ দশমিক ০৮ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।