৪ মাসে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে কমেছে রেমিট্যান্স

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ডলার আয়ের একটি উৎস বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্স (প্রবাসী আয়। চলমান ডলার সংকটে রেমিট্যান্সে সুখবর নেই। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায়  রেমিট্যান্স ৪ শতাংশের বেশি কমেছে। মূলত রেমিট্যান্স আহরণকারী শীর্ষ দুই দেশ সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স অস্বাভাবিক হারে কমেছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়ের উৎস যুক্তরাষ্ট্র থেকে আয় আসা প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। অন্যদিকে সৌদি আরব থেকে আয় আসা প্রায় ১৯ শতাংশ কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দেশে দেড় বছর ধরে ডলার-সংকট চলছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ পড়েছে। ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় আসা কমে যাওয়ায় সেই চাপ আরও বাড়ছে। চলতি অর্থবছরে প্রথম চার মাসে প্রবাসী আয় এসেছে ৬ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ কম।

জানা যায়, বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আহরণকারীর শীর্ষ দেশ সবসময় সৌদি আরব থাকে। এরপর যুক্তরাষ্ট্র। গত অর্থবছরের প্রথম দিকে রেমিট্যান্স আহরণকারী শীর্ষ দেশে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে শেষে দিকে দেশটি থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমতে থাকলে অর্থবছর শেষে আবারও শীর্ষ দেশ হিসেবে সৌদি আরবের নাম চলে আসে। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে শীর্ষ দুই দেশকে পেছনে পেলে রেমিট্যান্স আহরণকারী শীর্ষ দেশ হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে সৌদি থেকে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ১ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ চার মাসে সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স কমেছে ১৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাস (জুলাই-অক্টোবর) রেমিট্যান্স এসেছে ৬৯৫ মিলিয়ন ডলার; যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার। সে হিসেবে দেশটি থেকে চার মাসে রেমিট্যান্স কমেছে ৪৩ দশমিক ৬১ শতাংশ।

খাত-সংশ্লিষ্টরা জানান, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের বড় অংশই শিক্ষিত। তাদের আয় না কমলেও দেশে আয় পাঠানো কমিয়ে দিয়েছেন। আবার বৈধ পথের চেয়ে হুন্ডিতে দাম অনেক বেশি। এ জন্য এখন অনেকেই সেই পথ বেছে নিচ্ছেন। এছাড়া আয় পাঠানোর আগে অনেকেই দেশের সার্বিক পরিস্থিতিকেও বিবেচনায় নিচ্ছেন।

তথ্য অনুযায়ী, চার মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত হতে। এর পরিমাণ ১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার; যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৯৫৮ মিলিয়ন ডলার। সে হিসেবে ২০ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেড়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সৌদি আরব। তৃতীয় অবস্থানে যুক্তরাজ্যে থেকে চার মাসে এসেছে ৮২৩ মিলিয়ন ডলার। চতুর্থ অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র। পাঁচে থাকা ওমানে থেকে এসেছে ৩০২ মিলিয়ন, ছয়ে থাকা মালেশিয়া থেকে ৩৮৮ মিলিয়ন, কুয়েত থেকে ৪৭৬ মিলিয়ন, ইতালি থেকে ৪৯৬ মিলিয়ন, কাতার থেকে ৩৫৫ মিলিয়ন এবং বাহরাইন থেকে এসেছে ১৪৯ মিলিয়ন ডলার।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০