৫০০ ছবি এঁকেছেন আফিফা

এসএম রুবেল, কক্সবাজার: অনার্সপড়ুয়া শিক্ষার্থী আফিফা তার ছবিতে ফুটিয়ে তুলেছেন সৃষ্টিকর্তার ডাকে ফিরে যাওয়ার মুহূর্তকে। ছবি আঁকার প্রতি প্রবল ইচ্ছাশক্তি সফলতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে আফিফাকে। ছবি আঁকার ওপর তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই, অথচ নিজ প্রচেষ্টায় নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে আজ রংতুলির মিশ্রণে প্রকৃতির ছবি আঁকছেন এই চিত্রশিল্পী। করোনাকালে লকডাউনে যখন পুরো পৃথিবী স্তব্ধ হয়ে যায়, তখন অনার্সপড়ুয়া শিক্ষার্থী আফিফা ঘরে বসেই এঁকে গেছেন অসংখ্য ছবি। আজ তার আঁকা ছবি সুনাম কুড়াচ্ছে সর্বত্র। একেকটি ছবি যেন শিল্পীর নিপুণ হাতে রংতুলি মিশিয়ে ক্যাম্পাসই প্রাণবন্ত করে তুলেছে।

পুরো নাম আফিফা খানম বেবী। ছোটবেলা থেকেই বেড়ে ওঠা কক্সবাজার জেলার দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর বড়মহেশখালী ইউনিয়নের ফকিরাকাটা গ্রামে। বাবা মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল পল্লী চিকিৎসক এবং মা শামীমা আকতার গৃহিণী। ছয়-ভাইবোনের মধ্যে আফিফা পঞ্চম।

২০১১ সালে ফকিরাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসি, ২০১৭ সালে মহেশখালী আইল্যান্ড হাই স্কুল থেকে এসএসসি এবং ২০১৯ সালে সরকারি বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর বর্তমানে কক্সবাজার সরকারি কলেজে বাংলা বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত আছেন।

পড়াশোনার পাশাপাশি আফিফা ছবি আঁকতেই ভালোবাসেন। তার হাতের আঁকা ছবি নিঃসন্দেহে যেকোনো জাত শিল্পীকেও নিশ্চিত হার মানাবে। এরই মধ্যে আফিফা ৫০০টির মতো ছবি এঁকেছেন, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল ভূদৃশ্যের ছবি। তার আঁকা ছবি বেশ সুনাম কুড়িয়েছে মানুষের মাঝে।

আফিফার ছবি আঁকার গল্পটি শুরু হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকে। তখনকার চারুকলা বই দেখে নিজেই নিজেই ছবি আঁকার প্রচেষ্টা শুরু করেছিল এ চিত্রশিল্পী। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনার চাপে আর ছবি আঁকা হয়নি তার। পরে ২০২০ সালে করোনা সংকটের কারণে লকডাউনের কবলে পড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময়টুকুতে বাড়িতে বসে বসেই আবারও ছবি আঁকার কাজ শুরু করেন এবং এখন সময় পেলেই ছবি আঁকছেন।

ছবি আঁকা নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে চিত্রশিল্পী আফিফা আরও জানান, সামনের বছর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক আয়োজিত চিত্রপ্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করার প্রবল ইচ্ছা রয়েছে। এছাড়া পরবর্তী সময়ে দেশের বাইরেও চিত্রপ্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে আরও ভালোভাবে ছবি আঁকা শিখছেন এবং আঁকছেন।

নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে এই শিল্পী আরও বলেন, ‘আমি সবসময় বিশ্বাস করি মানুষ যে কাজটা করতে ভালোবাসে, সে কাজে সে সবচেয়ে ভালো এফোর্ড দিতে পারে। আর কাজ থেকেই যদি ভালো এফোর্ড আসে, তাহলে সেই কাজ যতই ছোট হোক না কেন তার থেকে সফলতা আসবেই।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০