আরিফুল ইসলাম, সাভার: প্রতিষ্ঠার ৫২ বছরেও কোনো ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস পায়নি ঢাকার ধামরাই সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা দরিদ্র পরিবারের সন্তানেরা বাড়তি অর্থ ব্যয় করে মেস ও বাসাবাড়িতে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
কলেজ সূত্র জানায়, ১৯৭২ সালের ১ জুলাই ধামরাই থানা রোড এলাকায় ৬ দশমিক ৬ একর জমিতে প্রতিষ্ঠা করা হয় ধামরাই সরকারি কলেজ। একাদশ, দ্বাদশ, ডিগ্রি পাস কোর্সসহ বর্তমানে আটটি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর বিষয় রয়েছে। কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫ হাজার ৫০০, যার মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী।
ধামরাইয়ের বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও আশুলিয়া, সাভার, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, কালিয়াকৈর, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়াসহ বিভিন্ন দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীরা কলেজটিতে পড়তে আসেন।
আবাসনের জন্য একসময় পুরোনো পরিত্যক্ত একটি ভবন ও কলেজ-সংলগ্ন একটি টিনের ঘর ব্যবহার করা হতো। তবে সেগুলোও আনুষ্ঠানিক কোনো ছাত্রাবাস ছিল না। এর বাইরে এত বছরেও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কোনো আবাসন ব্যবস্থা পায়নি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি।
কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা বলছেন, অনেক দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা এখানে পড়তে আসেন। কলেজের আবাসিক কোনো ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় মেস ও বাসা ভাড়া করে থাকেন। শিল্প এলাকা হওয়ায় ভাড়ার এসব আবাসন অত্যন্ত ব্যয়বহুল। ফলে বাড়তি অর্থ ব্যয় হওয়ায় অনেকেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ধামরাইয়ের থানা রোড এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় মেসে থাকেন কলেজের চার শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আজাদ হোসেন বলেন, ‘প্রতি মাসে তাদের চারজনের পাঁচ হাজার টাকা মেস ভাড়া, গ্যাস ও রান্নার লোক এবং সব খাবারের জন্য ২০ হাজার টাকা খরচ পড়ে। কলেজের ছাত্রাবাস থাকলে এর অনেক কম খরচ হতো।’
ধামরাই সরকারি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যও বিষয়টি নিয়ে আন্তরিক। আশা করছি শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুতই একটি উদ্যোগ নেয়া হবে।’
কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিম আকন্দ বলেন, ‘আমরা প্রকল্প পেয়েছিলাম। কিন্তু জমি সংকটে আমরা হল করতে পারিনি। ধামরাইয়ে জমি পাওয়া দুরূহ। ফলে সম্ভব হয়নি। আমরা নতুন বিভাগের জন্য আবেদন করেছি। নতুন একাডেমিক ভবন ও শিক্ষক প্রয়োজন। আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি।’