নিজস্ব প্রতিবেদক: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের শুল্ক বিভাগের গুদামে থাকা লকার থেকে ৫৫ কেজির বেশি স্বর্ণ গায়েবের ঘটনায় কাস্টমসের চার কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা কাস্টম হাউসের ওয়েবসাইটে বরখাস্তের আদেশের কপি আপলোড করা হয়েছে। এর আগে সোমবার ঢাকা কাস্টমসের কমিশনার এ কে এম নুরুল হুদা আজাদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেনÑসহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম সাহেদ, মো. শহীদুল ইসলাম, মাসুম রানা ও আকরাম শেখ।
সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি-১২ (১) অনুযায়ী তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম সাহেদকে সাময়িক বরখাস্তকালীন ঢাকা কাস্টম হাউস অফিস চলাকালীন নিয়মিত উপস্থিত থাকতে বলার পাশাপাশি ডেপুটি কমিশনারের (জনপ্রশাসন) কাছে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।
২০২০ সাল থেকে প্রতি মাসে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে বিভিন্ন যাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধ পথে আনা জব্দ করা স্বর্ণ গুদামে রাখা হতো। সবশেষ গত ১৩ আগস্ট পর্যন্ত জব্দ করা স্বর্ণ গুদামে রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতি ছয় মাস পরপর স্বর্ণের পরিমাণ যাচাই-বাছাই করা হয়। তবে গত ২ সেপ্টেম্বর যাচাই করতে গিয়ে কাস্টমস কর্মকর্তারা দেখতে পান, কয়েকটি লকার থেকে বিভিন্ন সময়ে জব্দকৃত স্বর্ণের বার সেখানে নেই। প্রথমে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হলেও পরে সেটি প্রকাশ পায়।
এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কাস্টমস বিভাগ। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গুদামে কিছুদিন আগেও সিসি ক্যামেরা সক্রিয় ছিল। কিন্তু চুরির ঘটনা প্রকাশে আসার পর জানা গেছে সিসি ক্যামেরা নষ্ট। যদিও সব ক্যামেরাই নষ্ট নয়। যে লকারগুলো থেকে স্বর্ণের বার চুরি হয়েছে, শুধু সেখানকার ক্যামেরাই নষ্ট। এই সিসি ক্যামেরাগুলা থেকে কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি।
গুদাম থেকে স্বর্ণ চুরির ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। এতে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। এরই মধ্যে কাস্টমসের আটজনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পুরো ঘটনার অনুসন্ধানে পুলিশ ও ডিবির পাশাপাশি কাজ করছে সিআইডি এবং দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক)।