নিজস্ব প্রতিবেদক: গার্মেন্টস শ্রমিক অখিল বিশ্বাস। তিনি রাজধানীর ডেমরার বাসিন্দা। ডেমরার একটি মিষ্টির দোকান থেকে ৩৮২ টাকা ৬০ পয়সার মিষ্টি কিনলেন। ইএফডিতে ভ্যাট দিলেন ৫৭ টাকা ৪০ পয়সা। আর ইএফডি চালান (ইনভয়েস) সংরক্ষণ করে লটারিতে জিতলেন ১০ হাজার টাকা। কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা (পূর্ব) কমিশনারেট থেকে দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকার চেক। গতকাল কমিশনার তাহমিনা হোসেন পূর্ব কমিশনারেটের কনফারেন্স রুমে লটারি বিজয়ী অখিল বিশ্বাসের হাতে চেক তুলে দেন। এসময় অতিরিক্ত কমিশনার ড. নাহিদা ফরিদী, যুগ্ম কমিশনার, মোহাম্মদ মাহফুজ আহমেদ, উপ কমিশনার মুহিবুর রহমান ভূঁইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা (পূর্ব) ভ্যাট কমিশনারেটের একাধিক কর্মকর্তা জানান, অখিল বিশ্বাস ১৭ জানুয়ারি ডেমরা বামুইল বাজারের সুমন মিস্টান্ন ভান্ডার হতে পারিবারিক অনুষ্ঠানের জন্য ৩৭২ টাকা ৬০ পয়সার মিষ্টি ক্রয় করেন। তিনি দোকান থেকে ইএফডি (ইএফডিএমএস) চালান চেয়ে নেন। আর মিষ্টি ক্রয়ের উপর ভ্যাট দেন ৫৭ টাকা ৪০ পয়সা। ইএফডি চালানটি (কূপন) সংরক্ষণ করেন। ৫ ফেব্রুয়ারি জানুয়ারি মাসে ইএফডি কূপনের উপর লটারি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অখিল বিশ্বাস চতুর্থ পুরস্কারে হিসেবে ১০ হাজার টাকা জিতেন।
একজন গার্মেন্টস শ্রমিক হয়েও দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে তিনি মাত্র ৫৭ টাকা ৪০ পয়সা ভ্যাট দিয়েছেন। আর সঙ্গে জিতে নিয়েছেন ১০ হাজার টাকা। পুরস্কার জিতে এনবিআরের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন অখিল বিশ্বাস। তিনি সকলকে ইএফডিতে কেনাকাটা করার আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে অখিল বিশ্বাসের মতো সকলকে নিজ দায়িত্ববোধ আর দেশপ্রেম থেকে ইএফডিতে কেনাকাটা ও চালান সংরক্ষণের আহ্বান জানান কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, জানুয়ারি মাসের ইএফডি কেনাকাটায় প্রথম পুরস্কার ১ লাখ টাকা জিতেছেন ঢাকা (পূর্ব) ভ্যাট কমিশনারেটের আওতাধীন একজন ক্রেতা। তিনি এ কমিশনারেটের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানে বসানো ইএফডি থেকে কেনাকাটা করেছেন। তবে এখনো সেই ক্রেতা যোগাযোগ করেননি।
এনবিআর সূত্রমতে, ভ্যাট প্রদান সহজ ও আহরিত ভ্যাট সরাসরি সরকারি কোষাগারে জমা নিশ্চিত করতে চালু করা হয়েছে ইএফডি (ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস) ও এসডিসি (সেলস ডেটা কন্ট্রোলার)। ইতোমধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের এক হাজার ৬০০ এর বেশি প্রতিষ্ঠানে ইএফডি বসানো হয়েছে। বিক্রেতা যাতে মেশিন চালু রাখে তা মনিটরিং করছে এনবিআর ও সংশ্লিষ্ট কমিশনারেট। তবে ইএফডি চালানকে জনপ্রিয় এবং ক্রেতাকে ভ্যাট প্রদানে উৎসাহিত করতে নগদ অর্থ পুরস্কার চালু করেছে এনবিআর। এতে প্রতি মাসে লটারির মাধ্যমে ১০১ ক্রেতাকে পুরস্কার হিসেবে ১২ লাখ ১৫ হাজার টাকা দেয়া হবে।
সূত্রমতে, প্রথম পুরস্কার হিসেবে একজন এক লাখ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে একজন ৫০ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে পাঁচজনের মধ্যে প্রত্যেকে ২৫ হাজার টাকা এবং চতুর্থ পুরস্কার হিসেবে ১০ হাজার টাকা করে ৯৪ জন পুরস্কার পাবেন। ৫ ফেব্রুয়ারি এনবিআর সম্মেলন কক্ষে প্রথমবারের মতো লটারি করা হয়। এনবিআর চেয়ারম্যান লটারির পুরস্কার ঘোষণা করেন। ইএফডি চালান (কূপন) এর উপর এ লটারি করা হয়। সেই লটারিতে মো. রনি হোসেন চতুর্থ পুরস্কার হিসেবে ১০ হাজার টাকা জিতেছেন।
###