৫ পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা বন্ধ, ৪৩ পণ্যে হ্রাস

নিজস্ব প্রতিবেদক: বস্ত্র খাতের পাঁচটি এইচএস কোডের আওতায় রপ্তানি হওয়া পণ্যে কোনো নগদ সহায়তা দেয়া হবে না। একই সঙ্গে অন্য ৪৩ খাতের রপ্তানি হওয়া পণ্যের ভর্তুকির হার কমানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বস্ত্র খাতের পাঁচটি এইচএস কোডের আওতায় রপ্তানি হওয়া পণ্যে কোনো নগদ সহায়তা দেয়া হবে না। এইচএস কোডগুলো হলো ৬১০৫ (ছেলেদের শার্ট), ৬১০৭ (ছেলেদের আন্ডারওয়্যার ও নাইট ড্রেস), ৬১০৯ (টি-শার্ট), ৬১১০ (সোয়েটার) এবং ৬২০৩ (ছেলেদের জ্যাকেট ও ব্লেজার)। এই পাঁচটি কোডে বস্ত্র খাতের মোট ৫৬ শতাংশ রপ্তানি হয় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। যেহেতু রপ্তানি আদেশ নেয়ার সময় ভর্তুকিসহ হিসাব করে তারা পণ্যের দর নির্ধারণ করেন, ফলে কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়া মাঝ পথে এসে এভাবে হঠাৎ ভর্তুকি তুলে নেয়া এবং কমানোয় তারা বড় ধরনের ক্ষতিতে পড়বেন।

ব্যবসায়ী ও ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, সরকার থেকে হঠাৎ করে নেয়া এমন সিদ্ধান্তে তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানিকারকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। অবশ্য সরকার এখন চরম সংকটে রয়েছে, যে কারণে বিভিন্ন খাতের প্রণোদনা ও সরকারের কাছে পাওনা পরিশোধ করতে পারছে না। শুধু সার ও বিদ্যুৎ খাতে সরকারের কাছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাওনা রয়েছে ৪২ হাজার কোটি টাকার মতো। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোর পাওনা ২৫ হাজার কোটি টাকার বিপরীতে সরকার বন্ড ইস্যু করছে। এখন ভর্তুকির চাপ কমাতে রপ্তানিতে প্রণোদনা কমানো হলো।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, দেশের রপ্তানি বাণিজ্য উৎসাহিত করতে ৪৩টি পণ্য ও খাতে নগদ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। ডব্লিউটিওর বিধান অনুসারে রপ্তানি ভর্তুকি হিসেবে বিবেচিত হয়। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ হলে কোনো ধরনের নগদ সহায়তা দেয়া যাবে না। ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটতে যাচ্ছে। উত্তরণের পর সম্পূর্ণ নগদ সহায়তা একবারে প্রত্যাহার করলে রপ্তানি খাত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে, যে কারণে বিভিন্ন খাতে নগদ সহায়তার হার অল্প অল্প করে কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আগামী ৩০ জুন জাহাজি করা পণ্যে নতুন হার প্রযোজ্য হবে।

নতুন হার অনুযায়ী, রপ্তানিমুখী দেশীয় বস্ত্র খাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্রব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা কমিয়ে তিন শতাংশ করা হয়েছে, আগে যা চার শতাংশ ছিল। ইউরো অঞ্চলে বস্ত্র খাতের রপ্তানিকারকদের প্রণোদনার হার তিন শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তাও দুই শতাংশ থেকে কমিয়ে এক শতাংশ করা হয়েছে। নিট, ওভেন ও সোয়েটারসহ তৈরি পোশাক খাতের সব ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প অতিরিক্ত চার শতাংশই বহাল থাকবে। তবে নতুন পণ্য বা নতুন বাজারে চার শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে তিন শতাংশ। তৈরি পোশাক খাতে বিশেষ নগদ সহায়তা এক শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। তবে এসব খাতে নির্ধারিত পাঁচটি এইচএস কোডের রপ্তানির বিপরীতে কোনো নগদ সহায়তা মিলবে না।

এমন এক সময়ে ভর্তুকিতে বড় পরিবর্তন এলো যখন তৈরি পোশাক খাতের বেতন বৃদ্ধি এবং বিদ্যুৎ-গ্যাসের সংকটের কারণে চাপে রয়েছেন উদ্যোক্তারা।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০