নিজস্ব প্রতিবেদক: নাজিমউদ্দিন রোডে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ইতিহাস, ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল শুক্রবার পুরোনো কারাগারের ভেতরে এ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি। ৬০৭ কোটি ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্প ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ব্রিটিশ শাসন আমলে ১৭৮৮ সালে একটি ‘ক্রিমিনাল ওয়ার্ড’ নির্মাণের মাধ্যমে ঢাকা কারাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়। কালের পরিক্রমায় এবং বাস্তবতার নিরিখে নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারটি দেশের বৃহৎ কেন্দ্রীয় কারাগার হিসেবে গড়ে ওঠে।
তিনি বলেন, অনেক স্মৃতিবিজড়িত এ কারাগারের রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন হতে শুরু করে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ পর্যন্ত অসংখ্য দেশপ্রেমিক কারাবরণ করেছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতাসহ দেশপ্রেমিক অসংখ্য বাঙালির নিকট পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারটি ছিল একটি ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত স্থান।
২২৮ বছরের পুরোনো এ কারাগার থেকে ২০১৬ সালে বন্দিদের কেরানীগঞ্জের নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। নতুন কারাগারে বন্দি স্থানান্তরের পর পুরোনো কারাগারের জমি ও অবকাঠামো ব্যবহারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কিছু দিকনির্দেশনা দেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ‘পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের ইতিহাস, ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প নেওয়া হয় বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সেনাবাহিনী ও কারা অধিদফতর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রকল্পের আওতায় ৯৫টি স্থাপনা অপসারণ করা হবে এবং ৩৬টি স্থাপনা সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করা হবে এবং কিছু নতুন স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। মূল কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে জাদুঘর সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন, মাল্টিপারপাস ভবন কমপ্লেক্স, চক কমপ্লেক্স, স্কুল, মসজিদ, প্রধান জেলগেট নির্মাণ, ল্যান্ডস্কেপিং, বনায়ন ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।
আসাদুজ্জামান কামাল জানান, পুরাতন কারাগারটি ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ তিনটি জোনে ভাগ করে কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। জোন ‘এ- তে রয়েছে কমার্শিয়াল বিল্ডিং কাম মাল্টিপারপাস হল নির্মাণ, জোন ‘বি’ তে রয়েছে নতুন চক মার্কেট, মসজিদ পুনর্নির্মাণ এবং জোন ‘সি’-তে রয়েছে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এবং জাতীয় চার নেতার কারা স্মৃতি জাদুঘর সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন, সেন্ট্রাল জেল গেট-ক্যানোপি ইত্যাদি কার্যক্রম।
এ প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশকিছু বাধা ছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কিছু অন্তরায় ইতোমধ্যে আমরা দূর করতে সক্ষম হয়েছি। বাকি অন্তরায়গুলো দূর করে পূর্ণাঙ্গভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে আমরা এগিয়ে যাব বলে আশা করছি।