৭ হাজার পয়েন্টের মাইলফলক স্পর্শ করল ডিএসইর সূচক

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: ঊর্ধ্বমুখী পুঁজিবাজারে সাত হাজার পয়েন্টের মাইলফলক স্পর্শ করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক।

গতকাল লেনদেন শুরুর কিছুক্ষণ পর ১৯ পয়েন্ট বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে সাত পয়েন্টে স্পর্শ করে সূচক। সারাদিনই ঊর্ধ্বমুখী থাকার কারণে লেনদেন শেষে সূচক বাড়ে ৭১ পয়েন্ট। ফলে সূচকের অবস্থান হয় সাত হাজার ৫২ পয়েন্ট।

এদিকে সূচকের পাশাপাশি রেকর্ড অবস্থানে রয়েছে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের বাজার মূলধন। বর্তমানে বাজার মূলধন রয়েছে পাঁচ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকা, যা আগে কখনও হয়নি। বাজারসংশ্লিষ্টদের মতে, বাজারে বর্তমান যে পরিস্থিতি রয়েছে, তা বিরাজ করলে অচিরে বাজার মূলধন ছয় লাখ কোটি টাকা হয়ে যাবে। বাজার মূলধন ও সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও সন্তোষজনক অবস্থানে রয়েছে।

গতকাল ডিএসইতে দুই হাজার ৮৬৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়। বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি এমন থাকলে অচিরে লেনদেন তিন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, বাজার পরিস্থিতি ঠিক থাকলে সূচক কত হলো আর লেনদেন কত হচ্ছে, তা ভাবার বিষয় নয়।

পুঁজিবাজারের ইতিহাসে মাত্র এক দিন তিন হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হতে দেখা যায়। ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়। সেদিন লেনদেনের পরিমাণ ছিল তিন হাজার ২৪৯ কোটি টাকা। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম শেয়ার বিজকে বলেন, সার্বিক পরিস্থিতিতে বাজার ভালো অবস্থানে রয়েছে। তবে এর মধ্য কিছু স্বলমূলধনি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়তে দেখা যাচ্ছে। এসব কোম্পানি থেকে যাতে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য আমরা এসব কোম্পানি ও সার্বিক বাজার পরিস্থিতি নজরদারিতে রেখেছি। তবে সবার আগে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকতে হবে। তাদের উচিত হবে দেখেশুনে বিনিয়োগ করা।

একই বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, এখন পর্যন্ত পুঁজিবাজারের সার্বিক যে পরিস্থিতি রয়েছে, তাকে ভালো বলতে হবে। এখনও স্বাভাবিক রয়েছে পুঁজিবাজার। তবে খেয়াল রাখতে হবে, বাজারে যেন কোনো ধরনের বৈরী পরিবেশ তৈরি না হয়। বাজার ওঠানামা করবে, এটা স্বাভাবিক বাজারের লক্ষণ। তবে এর মাঝেও বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকতে হবে। তাদের বিনিয়োগ করতে হবে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে।

প্রসঙ্গত, ২০১০-১১ সালে কয়েক দিনের ব্যবধানে বাজারে বেশিরভাগ শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়ে পড়ে। হুজুগে মেতে মৌল ভিত্তি যাচাই না করে বিনিয়োগকারীরা এসব অতিমূল্যায়িত শেয়ার কেনেন। পরবর্তী সময়ে বাজারে পতন হলে তাদের বড় ধরনের লোকসানে পড়তে হয়, যার মাশুল তারা আজও দিয়ে যাচ্ছেন।

২০১০ সালের শেষদিকে যারা বিনিয়োগ করেছিলেন, তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। সে সময় মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে ডিএসইর সূচক প্রায় ১২০০ পয়েন্ট বেড়ে ৮৯১৮-এ অবস্থান করে। আর ডিএসইর লেনদেন গিয়ে দাঁড়ায় তিন হাজার ২৪৯ কোটি টাকায়। কোনো কোনো শেয়ার ৩০০ থেকে ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত অতিমূল্যায়িত হয়ে পড়ে। এর পরপর বাজারে ধস নামে। ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর এক দিনের ব্যবধানে সূচকের পতন হয় ৬০০ পয়েন্ট। পরবর্তী সময়ে সূচক সাড়ে তিন হাজারের ঘরে নেমে যায়। লেনদেন চলে যায় ২০০ কোটি টাকার নিচে। সে সময় যারা অতিমূল্যায়িত শেয়ার কিনেছিলেন, তারা আজও লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারেননি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০