নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতিনিয়ত অনলাইনে ব্যবসায় শনাক্তকরণ নম্বর (বিআইএন) নিবন্ধন বাড়ছে। বাড়ছে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল সংখ্যা। ভ্যাট রিটার্ন দাখিলে স্বচ্ছতা ও ভ্যাট ফাঁকি রোধে ১৩ ডিজিটের বিআইএন চালু করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর মাধ্যমে ডিজিটালাইজেশনের আরও এক ধাপ এগিয়ে যায় এনবিআর। তবে ১৩ ডিজিটের বিআইএন নম্বর ছাড়া অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন (দাখিলপত্র) দাখিল করা যায় না। ৯ ও ১১ ডিজিটের বিআইএন বাতিল করেছে এনবিআর।
এরপরও মাঠ পর্যায়ে ৯ ও ১১ ডিজিট বিআইএনধারী প্রতিষ্ঠান ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে রিটার্ন দাখিল করছে বলে এনবিআর অভিযোগ পেয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান ১৩ ডিজিটের পরিবর্তে ৯ ও ১১ ডিজিটের বিআইএন দিয়ে রিটার্ন দাখিল করছেÑতাদের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে সব কমিশনারেটকে চিঠি দিয়েছে এনবিআর। একই সঙ্গে কমিশনারেটের নেয়া পদক্ষেপ বিষয়ে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে। গতকাল এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (মূসক-মনিটরিং, পরিসংখ্যান ও সমন্বয়) এমএম কবিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠি বিভিন্ন কমিশনারেটে পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২-এর অধীন মূসক নিবন্ধন সনদপত্র বা ব্যবসায় শনাক্তকরণ নম্বর (বিআইএন) ১৩ ডিজিট সম্পন্ন। এক্ষেত্রে ইতোপূর্বে ৯ ডিজিট কিংবা ১১ ডিজিট বিআইএন ব্যবহার করে আমদানি-রপ্তানি বা ব্যবসায় কার্যক্রম পরিচালনা করা বৈধ নয়। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিভিন্ন মাধ্যমে অবগত হয়েছে যে, অনেক প্রতিষ্ঠান এখনও ১৩ ডিজিটের বিআইএন সংগ্রহ না করে ৯ ডিজিট কিংবা ১১ ডিজিটের বিআইএন ব্যবহার করে ব্যবসায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিশেষ করে ৯ ডিজিট কিংবা ১১ ডিজিট বিআইএন ব্যবহার করে দাখিলপত্র দাখিল (ম্যানুয়ালি) করা হচ্ছে, যা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা গ্রহণ করছেন বলে জানা যায়। এ অবস্থায় যেসব প্রতিষ্ঠান ৯ কিংবা ১১ ডিজিটের বিআইএন ব্যবহার করে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তাদের ১৩ ডিজিটের বিআইএন প্রদানসহ কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছেÑতা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এনবিআরকে অবহিত করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
সূত্রমতে, প্রথমে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধনে ৯ ডিজিটের বিআইএন ইস্যু করে এনবিআর। পরে সফটওয়্যার আপডেট করতে ৯ ডিজিটের বিআইএন বাতিল করে ১১ ডিজিটের বিআইএন ইস্যু করা হয়। পরে আবার ১১ ডিজিটের বিআইএন বাতিল করে ৯ ডিজিটের বিআইএন ইস্যু করে এনবিআর। তবে কিছু ত্রুটি দেখা দেয়ায় ৯ ও ১১ ডিজিটের বিআইএন বাতিল করে ১৩ ডিজিটের বিআইএন চালু করে এনবিআর, যা বর্তমানে বহাল রয়েছে। অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন দাখিল, এলসি খোলা, আমদানি-রপ্তানি, ঠিকাদারি, অনলাইন ব্যবসা, যেকোনো ব্যবসা পরিচালনাসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে ১৩ ডিজিটের বিআইএন বাধ্যতামূলক।
এনবিআর সূত্রমতে, মাঠপর্যায়ে নিবন্ধন ও রিটার্ন জমার ক্ষেত্রে এলটিইউসহ ১২টি ভ্যাট কমিশনারেটের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। মার্চ পর্যন্ত অনলাইনে মোট নিবন্ধন নিয়েছে দুই লাখ ৫১ হাজার ৮২৯টি। আর রিটার্ন দাখিল হয়েছে এক লাখ ছয় হাজার ৪৬১টি। রিটার্ন দাখিলের মোট হার ৪২ দশমিক ২৮ শতাংশ। এর মধ্যে কুমিল্লা ৯৫ দশমিক ৬০ শতাংশ, যশোর ৯৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ, রংপুর ৮৫ দশমিক ৫০ শতাংশ, সিলেট ৮২ দশমিক ৫৪ শতাংশ, এলটিইউ ৭৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ, চট্টগ্রাম ৬৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর রাজশাহী ৫৬ দশমিক ৮১ শতাংশ, ঢাকা পূর্ব ৪৪ দশমিক ১২ শতাংশ, খুলনা ৪৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ, ঢাকা পশ্চিম ২৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ঢাকা উত্তর ১৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ ও ঢাকা দক্ষিণ ১৪ দশমিক ৩২ শতাংশ।
