৯ জুন কৃষিশুমারি শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী ৯ জুন শুরু হতে যাচ্ছে কৃষিশুমারি। ওইদিন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত সারা দেশে শহর ও পল্লি এলাকায় তথ্য সংগ্রহ চলবে। এ কার্যক্রমে নিয়োজিত বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে শুমারি সমন্বয়কারীদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনের সম্মেলন কক্ষে গতকাল এ প্রশিক্ষণ শুরু হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। আবহমানকাল থেকে বাঙালির প্রাত্যহিক জীবন-জীবিকার পাশাপাশি কৃষি আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। তাই কৃষির উন্নয়ন মানে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ক্রমহ্রাসমান কৃষিজমি, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রভাবসহ নানা কারণে দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষি খাত উন্নয়নে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা অর্থাৎ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কৃষি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এর উন্নয়ন ও কৃষকের কল্যাণকে সর্বোচ্চ বিবেচনায় নিয়ে রূপকল্প-২০২১ এবং রূপকল্প ২০৪১-এর আলোকে জাতীয় কৃষিনীতি, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট, ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ এবং অন্যান্য পরিকল্পনা দলিলের আলোকে বর্তমান সরকার সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও দিকনির্দেশনায় খোরপোষের কৃষি এখন বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত হয়েছে। ফলে দেশে কর্মসংস্থান সম্প্রসারিত হয়েছে। খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের স্থান দশম। কৃষি খাতে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এরই মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। বর্তমানে আমাদের লক্ষ্য টেকসই খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সরকার ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশের কৃষিব্যবস্থার মানোন্নয়নে উন্নয়ন পরিকল্পনা যথাযথ করার লক্ষ্যে এ বছর সরকার কৃষিশুমারি অনুষ্ঠান করছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, বিবিএসের সঙ্গে অন্যান্য সরকারি দফতরের তথ্যের কিছু গরমিল দেখা যায়। এক্ষেত্রে অন্যান্য দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে তথ্য সংগ্রহ করলে এ ধরনের মতপার্থক্য সহজেই দূর করা যায়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রইছউল আলম মণ্ডল বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি রূপকল্প ও একটি অভিলক্ষ্য রয়েছে। সবার জন্য নিরাপদ, পর্যাপ্ত ও মানসম্মত প্রাণিজ আমিষ নিশ্চিতকরণ রূপকল্প আর মৎস্য ও প্রাণিজ পণ্যের উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং মূল্য সংযোজনের মাধ্যমে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ হলো অভিলক্ষ্য। আমাদের মন্ত্রণালয় এ রূপকল্প ও অভিলক্ষ্য পূরণে বদ্ধপরিকর। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয় হলো কৃষি মন্ত্রণালয়; যা বিভিন্ন প্রকল্প ও সংস্থার মাধ্যমে কৃষি খাত উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। এ মন্ত্রণালয়ের কাজের পরিধি কৃষিপণ্যের উন্নয়ন থেকে শুরু করে কৃষি, কৃষি প্রকৌশল ও কৃষি অর্থনীতির ওপর গবেষণাসহ কৃষিভিত্তিক শিল্পের উন্নয়ন পর্যন্ত বিস্তৃত। বর্তমান সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় কৃষি খাতে যুগান্তকারী সাফল্য এসেছে। তিনি বলেন, কৃষি খাতে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়নে কৃষিশুমারির গুরুত্ব অপরিসীম। তাই তিনি আসন্ন কৃষিশুমারিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ও অনুষ্ঠানের সভাপতি সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্ত্তী বলেন, সরকারের অঙ্গীকার ‘রূপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধীন বিবিএস কাজ করছে। কৃষিশুমারি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন নীতি নির্ধারণ ও কৌশল প্রণয়নে সহায়ক হবে এবং জনসাধারণের মাঝে এ শুমারির ফল সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি মনে করেন।
অনুষ্ঠানে কৃষিশুমারি ২০১৯-এর জাতীয় সমন্বয়কারী বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক ড. কৃষ্ণা গায়েন ও কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি-২০১৮ প্রকল্পের পরিচালক জাফর আহাম্মদ খান উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০